নিয়োগপত্র, নিয়মিত পারিশ্রমিক, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ-সহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করতে শনিবার মালদহের চাঁচলে একটি বেসরকারি অতিথি-নিবাসের ঘর ভাড়া করে সভা করছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা। ছিল না মাইক বা সাউন্ড-বক্স। তা সত্ত্বেও সেখানে গিয়ে তাঁদের নেতা ও সদস্যদের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে সভা পণ্ড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে।
ঠিক কী কারণে ওই সভা বন্ধ করে দেওয়া হল, তা নিয়ে জেলার পুলিশ কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওখানে কারা সভা করছিল জানি না। ওঁদের কোনও অভিযোগের উত্তর দিতে চাই না।” চাঁচল থানার আইসি তুলসীদাস ভট্টাচার্য বলেন, “এ নিয়ে কিছু বলব না।” তবে, থানার এক পুলিশকর্মীর দাবি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই ওই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
ওই সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় পোড়িয়া বলেন, “সরকার আমাদের ন্যূনতম মজুরি না দিয়ে নিজেরাই আইন ভাঙছে। শ্রমমন্ত্রীকে জানিয়েও লাভ হয়নি। দাবি আদায়ে সংগঠিত হতেই পুলিশ তা ভাঙতে উঠেপড়ে লেগেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাদের সদস্যদের শাসাচ্ছে। এ দিন সভাই পণ্ড করে দিল। আমরা কোনও অন্যায় করিনি।” তাঁর অভিযোগ, এ ভাবে সংগঠিত হতে বাধা দিয়ে মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “পুলিশের হয়ে কাজ করলে আলাদা ভাবে সংগঠন করা চলে না। বিষয়টি আমার এক্তিয়ারে নেই। ওই কর্মীরা নিজেদের দাবি-দাওয়া সংশ্লিষ্ট দফতরে জানাতে পারতেন।”
যান নিয়ন্ত্রণ বা ভিড় সামলানোর জন্য বছর দুয়েক আগে রাজ্য পুলিশ চুক্তির ভিত্তিতে ‘সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ার্স’ নিয়োগ করে। সম্প্রতি দাবি-দাওয়া নিয়ে তাদের বিক্ষোভের জেরে স্বরাষ্ট্র দফতর রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাদের পরিচয় থেকে ‘পুলিশ’ শব্দটি উঠিয়ে দেয়। এ ভাবে ‘মর্যাদাহানি’ হওয়ায় ক্ষোভ গোপন করেননি ওই কর্মীদের অনেকেই। শনিবারের ঘটনায় সেই ক্ষোভের মাত্রা বাড়ল সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের। ইতিমধ্যেই পুলিশের বিরুদ্ধে সংগঠন করতে বাধা দেওয়া, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সদস্যদের শাসানোর অভিযোগ তুলে শ্রমিক-স্বার্থে কাজ করে এমন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের সংগঠন।