গঙ্গোত্রী দত্ত পদত্যাগপত্র তুলে দিচ্ছেন কমিশনারের কাছে। মঙ্গলবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
মেয়াদ ফুরোনোর সাড়ে পাঁচ মাস আগে দ্বিতীয়বার ইস্তফা দিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র কংগ্রেসের গঙ্গোত্রী দত্ত। মঙ্গলবার বিকেলে পুর কমিশনার নরবু ওয়াংদি ভুটিয়ার হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেন মেয়র। তাঁর সঙ্গে ইস্তফা দেন মেয়র পারিষদেরাও। ৪৭ আসনের ওই পুরসভায় তৃণমূল ও বাম কারও কাছেই পুরবোর্ড চালানোর মতো গরিষ্ঠতা নেই। পুর কমিশনার বলেন, “পুর দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।”
পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরোবে ১ অক্টোবর। পুর দফতর সূত্রের খবর, সরকারের পক্ষ থেকে যত দ্রুত সম্ভব কাউকে চেয়ারম্যান মনোনীত করে নতুন করে মেয়র নির্বাচনের দিন ঠিক করার ভার দেওয়া হতে পারে। তাতে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সরকার প্রশাসকের হাতে বোর্ড চালানোর ভার দিতে পারে। পুর দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, পরিষেবায় যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য এ দিনই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। ঘটনাচক্রে, যিনি শিলিগুড়ি পুরসভার তৃণমূলের পরিষদীয় দলের নেতাও।
এর আগে ২০১১-এর ২৭ জুন মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেন গঙ্গোত্রীদেবী। বামেদের ছেড়ে ইস্তফা দেওয়ার শর্তে ফের তাঁকে মেয়র মনোনীত করে তৃণমূল। বছর দেড়েক পরে তৃণমূল বোর্ড সরে যায়। সেই থেকে ৪৭ আসন বিশিষ্ট পুরসভায় মাত্র ১৪ জন কাউন্সিলর নিয়ে ‘সংখ্যালঘু’ বোর্ড চালাতে গিয়ে প্রতি পদে বিপাকে পড়ে কংগ্রেস। পুরসভায় এখন বামেদের ১৮ জন ও তৃণমূলের ১৫ জন কাউন্সিলর রয়েছেন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, দুর্নীতির অভিযোগ তো রয়েইছে। উপরন্তু, লোকসভা ভোটে একটি ওয়ার্ডেও কংগ্রেস এগিয়ে থাকতে পারেনি। কংগ্রেস সূত্রে খবর, এই অবস্থায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী মেয়রকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। এ দিন অধীর বলেন, “ওরা যখন কাজই করতে দিচ্ছে না, তখন পদ অলঙ্কার করে বসে থেকে তো লাভ নেই! তাই গঙ্গোত্রীকে বলেছি পদত্যাগ করতে।” গঙ্গোত্রীদেবী বলেন, “প্রথমে সহযোগীরা ও পরে দুই বিরোধী দলের অসহযোগিতা এবং মিথ্যে অপবাদে কাজে অসুবিধা হচ্ছে। প্রদেশ সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা পুর কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, “নানা দুর্নীতির অভিযোগে মেয়র কার্যত পালিয়েছেন।” বামেদের তরফে পুরসভার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম জানান, তাঁরা কোনওভাবেই প্রশাসকের হাতে পুরবোর্ড যাক তা চান না। বামেরা বিরোধী ভূমিকা পালন করার উপরেই জোর দিয়েছেন।