ছাত্র সংসদের ঘর দখল ও পাল্টা দখলের অভিযোগকে কেন্দ্র করে টিএমসিপি ও এসএফআই সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজ চত্বর।
শুক্রবার বিকাল ৫টা নাগাদ ওই সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের ৭ জন করে মোট ১৪ জন জখম হয়েছেন বলে টিএমসিপি ও এসএফআইয়ের দাবি। তাঁদের মধ্যে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তথা টিএমসিপির রায়গঞ্জ শহর কার্যকরী সভাপতি বিবেক গুপ্ত ও প্রথম বর্ষের ছাত্র তথা টিএমসিপির নির্বাচিত ছাত্র সংসদ প্রতিনিধি দেবজিৎ দে নামে দু’জনকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালীন ইটের আঘাতে জখম হয়েছেন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা এসএফআইয়ের সায়শ্রী ভৌমিকও। একটি বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে। রায়গঞ্জের ডিএসপি (ডিআইবি) সুজিত ঘোষের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী কলেজে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ দিন রাতে এসএফআইয়ের তরফে টিএমসিপির ১২ জন সমর্থক ও টিএমসিপির তরফে এসএফআইয়ের ৮ জন সমর্থকের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তে কারোর বিরুদ্ধে হামলা চালানো বা সংঘর্ষে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র সংসদ এসএফআইয়ের দখলে রয়েছে। এদিন দুপুরে টিএমসিপির কয়েকজন নির্বাচিত সদস্য ছাত্র সংসদের ঘরে ঢুকলে তাঁদেরকে এসএফআইয়ের সমর্থকেরা ধাক্কা মেরে বাইরে বার করে দেন বলে অভিযোগ। পক্ষান্তরে টিএমসিপি সমর্থকদের বিরুদ্ধেও ছাত্র সংসদের ঘরে ঢুকে এসএফআই সমর্থকদের মারধর করে একটি কাঠের টেবিলের পাদানি ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠে। দুপক্ষের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে এদিন দুপুর থেকেই উত্তেজনা ছিল কলেজ চত্বরে। বিকালে টিএমসিপি সমর্থকেরা তাঁদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে এসএফআই সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে ফেরার সময় তাঁদের উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে ইট ও পাথর ছুঁড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ।
ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সায়শ্রী অভিযোগ করে বলেন, “এসএফআই সমর্থকদের ভয় দেখিয়ে মারধর করে এদিন টিএমসিপি সমর্থকেরা জোর করে ছাত্র সংসদের ঘর দখল করার চেষ্টা করে।” টিএমসিপির জেলা সভাপতি অজয়বাবুর পাল্টা অভিযোগ, “এসএফআই সমর্থকেরা বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে এসে টিএমসিপি সমর্থকদের উপর হামলা চালায়।”
কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীর রায় বলেন, “কলেজের এদিনের ঘটনায় আমি খুব বিরক্ত বোধ করছি। এসব চলতে থাকলে পঠনপাঠন ও স্নাতক স্তরের পরীক্ষা ফর্ম পূরণের কাজ ব্যহত হবে।”