মেয়রের ইস্তফা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও শিলিগুড়ি পুরবোর্ড কী ভাবে চলবে সেই দিশা মেলেনি। রাজ্য সরকারের কাছ থেকেও কোনও নির্দেশিকা পৌঁছয়নি পুরসভার কমিশনারের কাছে। উপরন্তু বুধবার ২ এবং ৫ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কংগ্রেস কাউন্সিলর গৌরী দত্ত এবং শর্মিলা শর্মা। শিলিগুড়ির পুর কমিশনার নরবু ওয়াংদি ভুটিয়া অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি।
এই অবস্থায়, কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের কাউন্সিলরদের একাংশকে দলে টানার চেষ্টা করছে তৃণমূল। একাধিক কাউন্সিলরকে ফোনে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে কংগ্রেসের জেলা স্তরের এক নেতার দাবি। সে জন্য দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে শীঘ্রই বৈঠকে বসবেন জেলা স্তরের নেতাদের কয়েকজন। জেলা কংগ্রস নেতা জীবন মজুমদার বলেন, “অতীতে অন্য দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দলে টেনে তৃণমূল মহকুমা পরিষদ দখল করেছে। এখন পুরসভা দখলের চেষ্টাও হতে পারে। আমাদের দলের কেউ যাবেন বলে মনে হয় না। যদি যান, তা হলে শহরের মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ করা হবে।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, দু’য়েক দিনের মধ্যে শিলিগুড়িতে দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করবেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “এখনই আমরা সে সব কিছু ভাবিনি। পুর দফতর থেকে কী নির্দেশ দেওয়া হয় আগে তা দেখা হবে। সেই মতো ব্যবস্থা হবে।”
মঙ্গলবার সপার্ষদ ইস্তফা দেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। তিনি বলেন, “আমাদের দুই জন বরো চেয়ারম্যান এ দিন ইস্তফা দিয়েছেন। আমাদের কোনও কাউন্সিলর অন্য দলে যাবেন তেমন কোনও খবর নেই।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির অধীর চৌধুরীর নির্দেশে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্তরে কংগ্রেসের কমিটিগুলি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এখন নেতৃত্বের ভার কাকে দেওয়া হবে সেই দিকেও তাকিয়ে রয়েছেন কংগ্রেসের কাউন্সিলররা।
এ দিনই সন্ধ্যায় বাম কাউন্সিলরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। পরে বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “১৮ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে এ দিন আমরা বৈঠক করেছি। সকলেই এক জোট রয়েছেন।” বামেদের একাংশের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে দল ভাঙানোর খেলায় নামতে পারে তৃণমূল। কেন না ইতিমধ্যেই মহকুমার একাধিক পঞ্চায়েত সমিতি এবং পঞ্চায়েত তৃণমূল এই ভাবে দখল করেছে। পুরসভা দখল করতেও তারা সেই চেষ্টা করবে বলেই কংগ্রেস এবং বিরোধীদের একাংশের ধারণা।