মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে রোগীর আত্মীয়দের মারধরের ২৪ ঘণ্টা পরেও অধরা অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। তারা এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলি। একই সঙ্গে আহতেরাও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, “অভিযুক্তেরা রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দফতরের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর খুবই ঘনিষ্ঠ হওয়ায় পুলিশ গ্রেফতার করার সাহস পাচ্ছে না।” যদিও মন্ত্রী পুলিশকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থার নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত বুধবার গভীর রাতে মা বাসন্তী সরকারকে হাসপাতালে ভর্তি করে বাড়ি ফিরছিলেন পেশায় মাছ ব্যবসায়ী নির্মল সরকার। তাঁর সঙ্গে এলাকারই এক বন্ধু সুজিত মণ্ডল ও রিক্সাচালক সঞ্জয় দত্ত ছিলেন। তাঁদের বাড়ি ইংরেজবাজার পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণপল্লি এলাকায়। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালের মর্গের সামনে মধু ঘোষ ও তাঁর দাদা শ্যাম ঘোষ পথ আটকে মদ খাওয়ার টাকা দাবি করে। টাকা না পেয়ে তাঁদের মারধর করা হয়।
এ দিন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে নির্মলবাবু বলেন, “অভিযোগ করার পরে ২৪ ঘণ্টা হয়ে গিয়েছে। অথচ পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না। আমরা পথ অবরোধ থেকে শুরু করে থানা ঘেরাও করতে বাধ্য হব।” এই নিষয়ে পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তেরা ফেরার। তল্লাশি চলছে।”
তবে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক অতীতের বুলেট-কাণ্ডের কথা তুলে শাসক দলকে বিঁধেছে বিরোধীরা। জেলা কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, “আগে দেখেছি, পুলিশ বুলেটকে খুঁজে পাচ্ছিল না। পরে সে থানায় নিজে এসেই ধরা দিল। এক্ষেত্রেও ঠিক একই ঘটলে অবাক হব না।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রের অভিযোগ, অভিযুক্তরা তৃণমূল কর্মী-সমর্থক হওয়ায় পুলিশ নিষ্ক্রিয়। বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দুশেখর রায়ের অভিযোগ, “হাসপাতালের মতো জায়গায় রোগীর আত্মীয়দের টাকা পয়সার জন্য মারধর করছে তৃণমূলের কর্মীরা। তবুও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।”
মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “পুলিশ বিষয়টি দেখছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের বক্তব্য, “দল কখনও এমন ঘটনাকে প্রশ্রয় দেয় না। পুলিশ পুলিশের কাজ করছে।
এ দিন অবশ্য হাসপাতাল চত্বরে দেখা যায়নি মধুকে। তবে বাপিকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, “তেমন কিছু ঘটনা ঘটেনি। মধুকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।”