ডুয়ার্সের বন্ধ থাকা রহিমাবাদ চা বাগানে গত এক সপ্তাহে বিনা চিকিত্সায় চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করল আরএসপি। ডুয়ার্স চা বাগান ওয়ার্কাস ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা আরএসপি’র কুমারগ্রাম জোনাল সম্পাদক দীপক দাস রবিবার ওই দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “কুমারগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকে বারবার চিঠি দিয়ে জানানোর পরেও ওই বন্ধ চা বাগানে চিকিত্সার কোনও ব্যবস্থা হয়নি। এতে বিনা চিকিত্সায় চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।” তিনি জানান, বাবলু বড়াইক (৫৫), কুসু পায়েক (৪২), যোসেফ মুন্ডা (৬০) ও ঝালো ওরাও (৫০) বিনা চিকিত্সায় মারা গিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর মৃত্যুর খবর গোপন করার চেষ্টা করছে।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঠাকুর অবশ্য বিনা চিকিত্সায় মৃত্যুর অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর পাল্টা দাবি, “বাগানে বিনা চিকিসায় কারও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা নেই। এক সপ্তাহ নয়, গত দুই সপ্তাহে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি।” তিনি জানান, ববি খাতুন (৩৪) বিষ খাওয়ায় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে, যোসেফ মুন্ডা দীর্ঘদিন নেশা করার জন্য লিভারের অসুখে ভুগছিলেন। তিনিও চিকিত্সাধীন অবস্থায় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। ঝালো ওরাও নামের এক অস্থায়ী শ্রমিক উচ্চ রক্ত চাপ জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর কারও কথা জানি না। বিনা চিকিত্সায় মৃত্যুর অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাছাড়া বাগানে নিয়মিত স্বাস্থ্য কর্মীরা পরিষেবা দিচ্ছেন। একটা স্বাস্থ্য কেন্দ্রও রয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ৯ ডিসেম্বর শ্রমিক অসন্তোষের পর নিরাপত্তা অভাবের কারণ দেখিয়ে মালিকপক্ষ সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিশ দিয়ে বাগান ছেড়ে চলে যান। এতে বাগানের ৮৫০ জন শ্রমিক কর্মচারী বিপাকে পড়েন। দু’বার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হলেও মালিকপক্ষ না আসায় বৈঠক ভেস্তে যায়। ব্লক প্রশাসনের দাবি, বাগান বন্ধ হওয়ার পর সমস্ত শ্রমিকদের সরকারিভাবে ১২ কেজি করে দু’দফায় চাল বিলি করা হয়েছে। সামনের সপ্তাহে ফের চাল বিলি করা হবে। এ ছাড়াও বাগানে ১০০ দিনের কাজ শুরু হয়েছে।