দলীয় বিধায়কদের নিজের বিধানসভা এলাকার সার্বিক উন্নয়নের প্রস্তাব তৈরি করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার রায়গঞ্জের সার্কিট হাউসে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য, সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে দলে যোগ দেওয়া গোলপোখরের বিধায়ক গোলাম রব্বানি এবং ইসলামপুরের দলীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের তৃণমূলের দলনেতা গৌতম পালও। তবে ওই বৈঠকে দলীয় বিধায়ক হামিদুল রহমান ছিলেন না। কেন? দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে কিছু দিন ধরেই তিনি অসুস্থ।
দলের অন্দরমহলের খবর, বৈঠকে দলীয় বিধায়কদের নিজের বিধানসভা এলাকার সার্বিক উন্নয়নের প্রস্তাব তৈরি করে দ্রুত তা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের কথা হামিদুলকেও পরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জেলায় ৯টি বিধানসভার মধ্যে ইটাহার, গোয়ালপোখর, ইসলামপুর ও চোপড়া তৃণমূলের দখলে। রায়গঞ্জ এবং কালিয়াগঞ্জ কংগ্রেসের এবং করণদিঘি, হেমতাবাদ ও চাকুলিয়া বামফ্রন্টের দখলে রয়েছে। দলীয় সসূত্রে জানা গিয়েছে, বিরোধীদের দখলে থাকা ওই পাঁচটি বিধানসভা এলাকার সার্বিক উন্নয়নের প্রস্তাব তৈরির দায়িত্ব বর্তেছে দলের জেলা সভাপতি অমল আচার্যের উপরে। এ ব্যাপারে অমলবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জেলার সার্বিক উন্নয়ন চান। তাঁর নির্দেশ মেনেই বিধায়করা ওই কাজ করবেন।”
মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশকে অবশ্য কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে ক্ষমতায় আসার ররে গত তিন বছরে জেলায় কোনও উন্নয়ন হয়নি।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক বীরেশ্বর লাহিড়ীর অভিযোগ, “বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সুবিধা পেতেই মুখ্যমন্ত্রী ওই নির্দেশ দিয়েছেন। মানুষ যা বোঝার বুঝেছেন।” বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তীর কটাক্ষ, “গত তিন বছরে তৃণমূলের বিধায়করা উন্নয়ন শুধু মুখেই করে গিয়েছেন। কাজের কাজ যে হয়নি ওই নির্দেশই সে কথা বলে দিচ্ছে।”
সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ মালদহ থেকে সড়কপথে মুখ্যমন্ত্রী রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার সার্কিট হাউসে যান। রাতে সেখানে থাকার পর সকালে দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক সেরে জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে ও পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজার সঙ্গে কথা বলে পুলিশ ও প্রশাসনের কাজকর্মের ব্যাপারে খোঁঁজখবর নেন। এরপর বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রচারের জন্য দুটি ট্যাবলোর উদ্বোধন করে দুই দিনাজপুরের প্রশাসনিক বৈঠক ও সরকারি সভায় যোগ দিতে তিনি সড়কপথে গঙ্গারামপুরে চলে যান।