বিতর্ক আরএসএসের লাঠি-মিছিলে

পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি না-নিয়ে লাঠি নিয়ে রায়গঞ্জ শহরে মিছিলের অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) বিরুদ্ধে। বুধবার বিকেলে আরএসএসের কয়েকশো সদস্য রায়গঞ্জের রেল স্টেশন থেকে সুদর্শনপুর এলাকার সারদা স্কুল পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তায় সাংগঠনিক উর্দি পড়ে লাঠি নিয়ে মিছিল করেন। মিছিল চলাকালীন শহরে নানা পাড়ায় বিজেপির তরফে তাঁদের ফুল দিয়েও সংবর্ধনা জানানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৪ ০১:৪১
Share:

রায়গঞ্জে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সদস্যদের মিছিল। ছবি: তরুণ দেবনাথ।

পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি না-নিয়ে লাঠি নিয়ে রায়গঞ্জ শহরে মিছিলের অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) বিরুদ্ধে। বুধবার বিকেলে আরএসএসের কয়েকশো সদস্য রায়গঞ্জের রেল স্টেশন থেকে সুদর্শনপুর এলাকার সারদা স্কুল পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তায় সাংগঠনিক উর্দি পড়ে লাঠি নিয়ে মিছিল করেন। মিছিল চলাকালীন শহরে নানা পাড়ায় বিজেপির তরফে তাঁদের ফুল দিয়েও সংবর্ধনা জানানো হয়।

Advertisement

পুলিশ দাবি করেছে, ওই মিছিলের ব্যাপারে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসনের কাছেও মিছিলের উদ্যোক্তারা কোনও আবেদন করেননি বলে প্রশাসনের এক কর্তার দাবি। আরএসএসের উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা প্রদীপ অধিকারীকে ফোন করা হলেও তা বেজে গিয়েছে। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তীর দাবি, ‘মিছিল নয়, রুট-মার্চ করেছেন আরএসএস-এর স্বেচ্ছাসেবকরা। সে জন্য অনুমতি প্রয়োজন হয় না বলে তাঁর দাবি। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “কোনও সংগঠন বিনা অনুমতিতে শহরে মিছিল করে থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “অনুমতি না নিয়ে লাঠি হাতে মিছিল করাটা একেবারেই বেআইনি। এতে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হতে পারে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুলিশ সুপারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দও আরএসএস তো বটেই, রাজ্যের শাসক দলের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “এ রাজ্যে যে পুলিশ-প্রশাসন বলে কিছুই নেই, তা আরএসএসের বিনা অনুমতিতে লাঠি মিছিলই আর এক বার প্রমাণ করল।”

Advertisement

রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেছেন, বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতা লাভের পরে তৃণমূল যতই হুঙ্কার দিক, বিরোধীদের আক্রমণ করুক আরএসএসকে যে রাজ্য সরকার ছাড় দিচ্ছে, তা এ দিন স্পষ্ট হয়েছে। না হলে বিনা অনুমতিতে লাঠি-মিছিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না কেন?” আরএসএস সূত্রের খবর, গত ১৪ মে থেকে সারদা স্কুলে রাজ্য সহ ওড়িষা, সিকিম, অসম, আন্দামান, উত্তরবঙ্গের নানা জেলার আরএসএস স্বয়ংসেবক নিয়ে একটি সাংগঠনিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ৩ জুন পর্যন্ত। গত ১৭ ও ১৮ মে ওই প্রশিক্ষণে হাজির হয়েছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভগবত। আরএসএসের তরফে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্করবাবু যুক্তি দেন, “আরএসএসের সদস্যরা কয়েক দিন শারীরিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর এ দিন অনুশীলন করতেই শহরে রুট-মার্চ করেছেন। এটা সামাজিক কাজ। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।” তাঁর অভিযোগ, বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি দেশের মানুষের সমর্থন হারিয়ে প্রচারের আলো পেতেই আরএসএসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement