দলের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহকে জায়গা ছেড়ে দিতে আগামী পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান না দিনহাটা পুরসভার ফরওয়ার্ড ব্লক চেয়ারম্যান চন্দন ঘোষ।
দলের অন্দরের খবর, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহকে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান হিসাবে তুলে ধরে ভোটে লড়ার ব্যাপারে দলের প্রভাবশালী গোষ্ঠী সরব হয়েছে। উদয়নবাবু প্রার্থী হয়ে জয়ী হলে চন্দনবাবুর ফের চেয়ারম্যান হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। আবার নিজে যদি প্রার্থী হন ও ঘটনাচক্রে দলের খারাপ ফল হয়, সেই দায় এড়াতে পারবেন না বিদায়ী চেয়ারম্যান। দলের একাংশের মতে, এমন পরিস্থিতি এড়াতেই জেলা সম্পাদককে জায়গা ছেড়ে দিতে চাইছেন পুরসভার চেয়ারম্যান।
যদিও চেয়ারম্যান ঘনিষ্ঠরা তা মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, চন্দনবাবু রাজি না হওয়াতেই ফরওয়ার্ড ব্লকের দুর্গ বলে পরিচিত দিনহাটা পুরসভা রক্ষায় খোদ উদয়ন গুহকে প্রার্থী হিসাবে আসরে নামতে হচ্ছে। চন্দন ঘোষ অবশ্য বলছেন, “আমার কোমরে অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসকেরা বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সেই সুযোগই হচ্ছে না। এতে সমস্যা হচ্ছে বলে আসন্ন পুরসভা ভোটে লড়তে চাইছি না। সেটা দলকে জানিয়েছি। তা ছাড়া, বাবুনকে (উদয়ন গুহের ডাক নাম) প্রার্থী হতে আমিই প্রথম প্রস্তাব দিয়েছি। অন্য কারণে সরে দাঁড়াবার কথা ঠিক নয়।”
ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “কে কী বলছেন, জানি না। আমরা এখনও চন্দনবাবুকে প্রার্থী হিসাবে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। আমি লড়লেও উনি প্রার্থী হয়ে জিতলে ফের চেয়ারম্যান হবেন। আমার জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। নেতা-কর্মীরা অনেকেই আমাকে পুরভোটে প্রার্থী হিসাবে চাইছেন ঠিকই। আমার ব্যক্তিগত কোন ব্যাপার নেই। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত।”
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে দিনহাটা পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। গত পুর-নির্বাচনে ১৫ আসনের ওই পুরসভায় ফরওয়ার্ড ব্লক ৯টি, সিপিএম ৪টি ও তৃণমূল ২টি আসন পায়। পরে একটি আসনের উপনির্বাচনেও জয়ী হন ফরওয়ার্ড ব্লক। কিন্তু এখন রাজ্যে শাসকের পালাবদল হয়েছে। বামেদের বদলে তৃণমূল ক্ষমতায়।
দিনহাটা মহকুমায় পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ভাল ফল করেছে তারা। তাই বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক নেতারা এ বার দিনহাটার পুর দূর্গ রক্ষা করা নিয়ে আগেভাগে কোমর বেঁধে নামতে চান। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে।
ওই প্রস্তুতির মধ্যে খোদ পুরসভা চেয়ারম্যান চন্দনবাবুর বদলে উদয়নবাবুকে তুলে ধরে ভোটে যাওয়ার দাবি তোলেন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ। তাঁদের মতে, বিদায়ী পুর চেয়ারম্যানের কাজকর্ম নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। পানীয় জল, নিকাশির সমস্যার সর্বত্র সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ। তাই চন্দনবাবুর পরিবর্তে বিকল্প হেভিওয়েট কাউকে চেয়ারম্যান হিসেবে তুলে ধরে নির্বাচনে যাওয়া দরকার। ওই পুরসভার আসন সংখ্যা একটি বেড়েছে। নির্বাচন হবে ১৬টি ওয়ার্ডে।