মুখ্যমন্ত্রীর থাকার কথা ছিল এই ঘরে। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ সফরে যাতায়াতের পথে মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারেন ভেবে ঢেলে সাজা হয়েছিল মালদহ সার্কিট হাউস। মালদহ পুরাতন সার্কিট হাউসের সমস্ত ঘরের এসি মেশিন রাতারাতি বদলানো হয়েছে। পুরানো যন্ত্র সরিয়ে বসানো হয়েছে নতুন বাতানুকূল যন্ত্রও। প্রশাসন সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী যে ঘরে থাকতে পারেন, সেটিতে দু’টি বাতানুকূল যন্ত্র বসানো হয়েছে। বাকি চারটি ঘরেও ৫টি নতুন বাতানুকূল যন্ত্র বসানো হয়েছে বলে পূর্ত দফতরের একটি সূত্রের দাবি। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য মালদহ সার্কিট হাউসে যাননি।
গত লোকসভা ভোটের প্রচারে মালদহে গিয়ে একটি বেসরকারি হোটেলে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে এসি ভিভ্রাটের জেরে ঘরে আগুন ও প্রচুর ধোঁয়া হয়ে যায়। তা নিয়ে তদন্ত হয়। এবার তাই আগে থেকেই সতর্ক ছিলেন প্রশাসনের কর্তারা। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী জেলার আধিকারিকদের নিয়ে মালদহের যে কলেজ অডিটোরিয়ামে বৈঠক করেছেন, সেখানে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে অস্থায়ীভাবে ২২টি ৫ টনের এসি যন্ত্র বসানো হয়। ছিল পাঁচটি জেনারেটরও। কলকাতার কালীঘাটের এক ঠিকাদার সংস্থাকে সেই বরাত দেওয়া হয় বলে পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই ঠিকাদার সংস্থা জানিয়েছে, পূর্ত দফতর (ইলেকট্রিক্যাল)-এর টেন্ডার মারফৎ বরাত পেয়েছিলেন তাঁরা। তবে তার জন্য কত টাকা নেওয়া হয়েছে, তা তাঁরা জানাতে চাননি।
জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী জানান, মুখ্যমন্ত্রীর মালদহ সফরে কোথায় কী লাগবে, পুরো বিষয়টি জেলা পরিষদের এইওকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের এইও অমলকান্তি রায় বলেন, “পুরাতন সার্কিট হাউস ও অডিটোরিয়ামে এসি লাগানোর বিষয়টি পূর্ত দফতরের (ইলেকট্রিক্যাল) নির্বাহী বাস্তুকার দেখছেন। যার যা দায়িত্ব পূর্ত দফতরের বিভিন্ন বিভাগকে দেওয়া হয়েছে।” পূর্ত দফতরের (ইলেকট্রিক্যাল) নিবার্হী বাস্তুকার পার্থ হালদার বলেন, “যা কাজ হচ্ছে সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারের অফিস থেকে হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।”
মালদহের জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ মৌসম বেনজির নূর বলেন, “যখন রাজ্যে দেনার দায়ে জর্জরিত তখন মুখ্যমন্ত্রীর জেলায় জেলায় গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে প্রশাসনিক বৈঠক করছেন। এর কোনও মানে হয় না।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রের অভিযোগ, “এই সরকার নাচ, গানে টাকা অপব্যয় করছে। মানুষের উপকারে লাগবে এমন কাজ করতে বললে সরকার বলে তাদের টাকা নেই। অথচ কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে চালু এসি মেশিন বদলে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য নতুন এসি মেশিন বসানো হচ্ছে। তাও সার্কিট হাউসে তিনি ঢুকলেনই না।”