রাস্তার পাশের সরকারি জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু’টি ক্লাবের বিবাদ থামাতে লাঠি চালিয়ে জনতার রোষের মুখে পড়ল পুলিশ। ভাঙচুর করা হল পুলিশের জিপ। তিন পুলিশ কর্মী সহ আট জন গ্রামবাসী জখম হয়েছেন। ঘটনার জেরে বুধবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শামুকতলা থানার ভাটিবাড়ি কার্জিপাড়া বাজার এলাকা। ভাটিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে আহতদের প্রাথমিক চিকিত্সা করা হয়। পুলিশের উপরে হামলার ঘটনায় ১৬ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা শুরু করে এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম অমল বাগচী। এই ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পুলিশের লাঠি চার্জের ঘটনায় ভাটিবাড়ি ফাঁড়ির ওসি উত্তম ঘোষের অপসারণ দাবি করেছে আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস।
আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া জানান, জমি দখল কে কেন্দ্র করে দ’ুটি ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে বিবাদ বাধে। দুই পক্ষের চার-পাঁচশো মানুষ লাঠি ও ধারালো অস্ত্র হাতে জড়ো হয়। বাসিন্দাদের থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিশকে। জনতা পুলিশের একটি জিপে ভাঙচুর চালায়। এই ঘটনায় আমাদের তিন পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন। একজন কে গ্রেফতার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি কাজল দত্ত বলেন, দুটি পুজো কমিটির মধ্যে জমি দখল কে কেন্দ্র করে বিবাদ বাধে। দু’পক্ষের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। অনেক নিরীহ মানুষ জখম হয়েছেন। আমাদের দলের এক কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনি পেশায় পুরোহিত। পুজো করে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। উত্তেজনার পরিবেশ তৈরী করাতেই পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। ভাটিবাড়ি ফাঁড়ির ওসির অপসারণ চেয়ে শীঘ্রই এসপির দ্বারস্থ হব আমরা।”
ভাটিবাড়ি ফাঁড়ির ওসি উত্তম ঘোষ বলেন, “জুনিয়র জিনিয়াস ক্লাব ও কালীবাড়ি পুজো কমিটির সদস্যরা লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে যেভাবে জমায়েত হয়েছিল তাতে বড় রকমের গন্ডগোল হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি।”
জুনিয়র জিনিয়াস ক্লাবের সজল বাগচী বলেন,“ওই জমি দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দখলে। গতকাল সন্ধ্যায় অন্যায় ভাবে আমাদের ক্লাবের ফেস্টুন ছিঁড়ে ও পাকা খুঁটি ভেঙ্গে কালীবাড়ি পুজা কমিটির সদস্যরা ওই জমি দখল করে। কালিবাড়ি পুজা কমিটির পীযূষ দেবনাথ বলেন, “উত্তেজিত জনতা ওই জমি দখল মুক্ত করেছে। কিন্তু পুলিশ এসে কোনও আলোচনা ছাড়া লাঠি চার্জ করায় উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। অথচ কালীবাড়ি পুজা কমিটির নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।”