ছাত্রীর রহস্য মৃত্যুর তদন্তে বক্সিরহাটে এসে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়ল দিল্লি পুলিশ। গত ২৮ অগস্ট দিল্লির একটি অতিথি নিবাস থেকে বক্সিরহাটের মহিষকুচি হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী রিঙ্কু সাহার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দশদিন আগে থেকেই নিখোঁজ ছিল ওই থা পরিচয় গোপন করে এক যুবকের সঙ্গে ওই ছাত্রী দিল্লির অতিথি নিবাসে উঠেছিল বলে পুলিশ জানতে পারে। এই ঘটনার জেরেই দিল্লি পুলিশের একটি দল কোচবিহারে তদন্তে আসে। বক্সিরহাট থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার দুপুরে ছাত্রীর স্কুলে পৌঁছয় দিল্লি পুলিশের তিন সদস্যের দলটি। দুপুর একটা নাগাদ বক্সিরহাট থানার ওসি জয়দেব ঘোষ দিল্লি পুলিশের দলটিকে মহিষকুচি হাইস্কুলে নিয়ে যান। পুলিশ দেখেই স্কুলের পড়ুয়ারা ক্ষোভ জানাতে শুরু করে। ঘটনার পরে এতদিন কেটে গেলেও রহস্যের কিনারা হল না কেন, সে প্রশ্ন তোলে তারা। তাদের সহপাঠীকে দিল্লিতে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে, দোষীদের শাস্তির দাবি জানায় পড়ুয়ারা।
বক্সিরহাট থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্কুলের মাঠে ওসি সহ পুলিশকর্মীদের ঘেরাও করে স্লোগান দিতে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীরা। দিল্লি পুলিশ তদন্তের জন্য সূদূর বক্সিরহাটে এলেও কেন ওই ছাত্রীর দেহ পৌঁছনোর ছ’দিন পরেও বক্সিরহাটের পুলিশ স্কুলে খোঁজ করেনি তা নিয়েই বিক্ষোভ দেখাতে থাকে তারা। মহিষকুচি হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক বিনোদ বিহারী বর্মন বলেন,“আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের বুঝিয়ে শান্ত করতে হয়েছে। দিল্লি পুলিশের তরফেও ওই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনার কিনারা হবে ও জড়িতরা পার পাবেনা বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।”
কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন,“দিল্লি পুলিশের একটি দল ওই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে জেলায় এসেছে। তদন্তকারীদের সবরকম সাহায্য করা হবে। স্কুলে ঘেরাওয়ের কথা জানি না। তবে স্থানীয় থানার ভূমিকা নিয়ে লিখিতভাবে কোনও অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।” পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৭ অগস্ট দুপুরে প্রাইভেট টিউশনি পড়তে গিয়ে ওই ছাত্রী নিখোঁজ হয়ে যায়। গত ২৭ অগস্ট সে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে মধ্য দিল্লির একটি অতিথি নিবাসে ওঠে বলে জানা যায়। পরদিন সকালে ওই অতিথি নিবাস থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের লোকদের সন্দেহ, মোবাইল ফোনে ওই যুবকের সঙ্গে রিঙ্কুর পরিচয় হয়। বিয়ের টোপ দিয়ে রিঙ্কুকে দিল্লিতে বিক্রির উদ্দেশ্যে যুবক নিয়ে যায়। তারপরে বিষয়টি জানাজানির আশঙ্কায় তাকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। বক্সিরহাট থানায় প্রথম দিন নিখোঁজ অভিযোগও নিতে চাওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে রিঙ্কুর পরিবার।