মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে কর্মিসভায় যোগ দিতে এসে কংগ্রেসের কাছে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের আবেদন জানালেন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা তথা দলের মালদহের পর্যবেক্ষক হাফিজ আলম সৈরানি। শুক্রবার বিকেলে হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুল লাগোয়া একটি আমবাগানে বামফ্রন্টের তরফে ওই কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। সেখানেই কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করে সৈরানি বলেন, ‘‘আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আসুন একসঙ্গে লড়াই করি। সর্বত্রই একসঙ্গে লড়ছি। তাহলে হরিশ্চন্দ্রপুর ও মালতীপুর বাদ থাকবে কেন?’’
মালদহে ১২টি আসনের মধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুর ও মালতীপুরে থমকে গিয়েছে জোট। হরিশ্চন্দ্রপুরে ফরওয়ার্ড ব্লক ও মালতীপুরে আরএসপি প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু ওই দুই আসনে কংগ্রেসও প্রার্থী দিয়েছে। এ দিনের কর্মিসভায় হাফিজ আসম সৈরানি ছাড়াও হাজির ছিলেন জেলা সিপিএম সম্পাদক অম্বর মিত্র, আরএসপির জেলা সম্পাদক গৌতম গুপ্ত। কর্মিসভায় তৃণমূল ও বিজেপিকে লাগাতার আক্রমণ করা হলেও কংগ্রেস সম্পর্কে অবশ্য বক্তারা প্রত্যেকেই নীরব ছিলেন।
সারদা থেকে নারদ কাণ্ডের জের টেনে এ দিন তৃণমূলকে চোর বলে আখ্যা দিয়ে সৈরানি বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা কী ভাবে চুরি করে তা ক্যামেরাতে সবাই দেখেছে। ওদের হটাতে হবে। আর বিজেপিও ভয়ঙ্কর। ওই দুই দলকে আটকানোর জন্যই আমরা একসঙ্গে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আসুন এখানেও একসঙ্গে লড়ব।’’
ফরওয়ার্ড ব্লকের আহ্বানকে অবশ্য গুরুত্ব দিয়ে রাজি নয় কংগ্রেস। এই প্রসঙ্গে জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, ‘‘একই দাবি তো আমরা প্রথম থেকেই জানিয়ে আসছিলাম। তাতে তো ওরা গুরুত্ব দেননি। এখন আর এসব বলে কি লাভ? ওই দুই আসনে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই-ই হবে।’’
এদিনের কর্মিসভায় তৃণমূল প্রার্থী তজমুল হোসেনকেও বিঁধেছেন প্রায় প্রত্যেকেই। সিপিএম ও আরএসপি নেতারা তাঁকে মিরজাফর আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, লোভে পড়ে তিনি নিজেই ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে শাসকদলে যোগ দিয়েছেন। তাকে কেউ তাড়ায়নি। টিকিট দেওয়া হবে না এমন কথাও বলা হয়নি। হরিশ্চন্দ্রপুরে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলেও কর্মিসভায় দাবি করেন বাম নেতারা।
হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল প্রার্থী তজমুল হোসেন অবশ্য বলেন, ‘‘কারা আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তা হরিশ্চন্দ্রপুরের মানুষ জানেন। তাই ওঁদের কথার আর নতুন করে উত্তর দিতে চাই না। কার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে তা নির্বাচনের পরেই বোঝা যাবে।’’