অনলাইনেই ভর্তি প্রক্রিয়া হবে রায়গঞ্জ কলেজে। গত বছরের মতো এ বারও কলেজে কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত রদের দাবিতে ছাত্র সংসদের বিরোধিতার, ‘চাপের’ মুখে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইস্তফা পাঠিয়ে দেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে।
বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ-সহ ‘অ্যাডমিশন’ কমিটির সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে পাঠিয়ে বৈঠক করেছেন উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ। ডাকা হয়েছিল কলেজের ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদ এবং শিক্ষক, অশিক্ষক প্রতিনিধি সদস্যদেরও। প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকের শেষে উপাচার্য জানিয়ে দিয়েছে, এ বছর রায়গঞ্জ কলেজে অনলাইনেই ভর্তি হবে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উত্তমকুমার রায়ও লিখিত ভাবে ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করেছেন এবং ছাত্র সংসদের তরফেও লিখিত ভাবে অনলাইন ভর্তির বিষয়ে সহমত জানিয়েছে। উপাচার্য সোমনাথবাবুর কথায়, “রায়গঞ্জ কলেজে অনলাইনে ভর্তি হবে। রাজ্য সরকারের নির্দেশে বলা হয়েছে, যে কলেজে পরিকাঠামো রয়েছে, সেখানে অনলাইনে ভর্তি হতে পারে। রায়গঞ্জ কলেজে এই পরিকাঠামো রয়েছে। ভর্তির প্রক্রিয়া যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় তার জন্য পুরো প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরদারি থাকবে। সেই সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়া, অনলাইনে ফর্ম ফিলাপের সময় সংশোধনের সুযোগ রাখা হয়েছে।”
কলেজ কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিতেই, ছাত্র সংসদ আন্দোলন শুরু করায় ভর্তি নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। এ দিনের বৈঠকে ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পুরো অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক দ্যুতিষ চক্রবর্তী পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করবেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সুশান্ত দাস, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অনলাইন ভর্তি কমিটির চেয়ারম্যান। রায়গঞ্জ কলেজের অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়ায় কারিগরি পরামর্শদাতা হিসেবে সুশান্তবাবুকে নিয়োগ করা হয়েছে। এ দিন বৈঠকের পরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উত্তমবাবু বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ মতোই পদক্ষেপ করা হবে। আমার ইস্তফাপত্রও প্রত্যাহার করেছি। দ্রুত কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে।” এ দিনের বৈঠকে স্থির হয়েছে, গতবারের মতো এ বারে কলেজে গিয়ে ভর্তির ফি জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে। অনলাইনে ফর্ম পূরণ করার সময়ে একটি চালান দেওয়া হবে, সে চালান নিয়ে স্টেট ব্যাঙ্কের যে কোনও শাখায় ফি জমা করা যাবে। সেই সঙ্গে ফর্ম ফিলাপ করার সময়ে একাধিক সংশোধনের সুযোগ থাকবে। পদ্ধতিগত ত্রুটি নিয়ে ছাত্র সংসদ প্রশ্ন তুললেও, অনলাইনের বিরোধিতা করায় ঘরে বাইরে ছাত্র পরিষদ নেতাদের অস্বস্তিতে পড়তে হয়। এ দিন বৈঠকের পরে উপাচার্য এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পাশে বসে ছাত্র সংসদের সম্পাদক শুভাশিস সাহা দাবি করেন, “অনলাইনে ভর্তির বিরোধিতা করিনি। আমাদের মন্তব্যকে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। আমরা অনলাইন ভর্তিতে কয়েকটি সমস্যার কথা বলে কিছু সুযোগ সুবিধে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। সেগুলি পূরণ হওয়ায় আমাদের কোনও আপত্তি নেই।”