প্রতীকী ছবি।
একাধিক চা বাগানের ঝোপঝাড় সাফাই না হওয়া নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হচ্ছে আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ৷ মূলত, মাদারিহাটের একাধিক চা বাগানে চিতাবাঘের উপদ্রব ঠেকাতেই এই উদ্যোগ জেলা পরিষদের৷ এ জন্য ২৬ ফেব্রুয়ারির পর বনকর্তা ও বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা৷ যে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রাজ্যের বনমন্ত্রীকেও৷
ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মাদারিহাটের রামঝোরা, ঝুমচিপাড়া, তুলসিপাড়া, গ্যারগেন্দা-সহ নানা চা বাগানে চিতাবাঘ-মানুষের সংঘাতের জেরে উদ্বেগ বাড়তে শুরু করে বন দফতরের অন্দরে৷ ওই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত চিতাবাঘের হানায় তিন শিশু-কিশোরের মৃত্যু হয়েছে৷ জখম হতে হয়েছে এক বৃদ্ধ ও এক কিশোরকে৷ পাল্টা বিষ মেশানো মাংস খাইয়ে দু’টি চিতাবাঘকে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে৷
ওই ঘটনার পর থেকে মাদারিহাটের বিভিন্ন চা বাগানে খাঁচা পাততে শুরু করেন বন দফতরের আধিকারিকেরা৷ যেগুলিতে এখনও পর্যন্ত ১১টি চিতাবাঘ বন্দি হয়৷ যার মধ্যে দু’টি চিতাবাঘকে মানুষখেকো বলে সন্দেহ বন দফতরের আধিকারিকদের৷ পাশাপাশি এতগুলি চিতাবাঘ খাঁচাবন্দি হওয়ায় মাদারিহাটের চা বাগানে এই উপদ্রব খানিকটা হলেও কমেছে৷ কিন্তু তারপরও ঝুঁকি নিতে নারাজ বন দফতরের আধিকারিকেরা। চা বাগান এলাকা থেকে আরও চিতাবাঘ খাঁচাবন্দি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা৷
তবে চিতাবাঘ-মানুষ সংঘাতের ঘটনা বৃদ্ধি পেতেই বন দফতরের তরফে বারবার দাবি করা হয়েছে, মাদারিহাটের বেশ কিছু চা বাগান ঝোপঝাড়ে ছেয়ে রয়েছে৷ যা সাফাই করতে বারবার আর্জি জানান হলেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা৷ যার ফলে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা চিতাবাঘ ওই ঝোপঝাড়ে আস্তানা তৈরি করছে৷ আর তাতেই বাড়ছে চিতাবাঘ-মানুষ সংঘাত৷ ঝোপঝাড় সাফাইয়ে ব্যবস্থা নিতে বারবার আর্জি জানিয়েও লাভ না হওয়ায়, অযত্নে পড়ে থাকা মাদারিহাটের ওই সব চা বাগানের বেশ কিছু জমি অধিগ্রহণ করতে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বনকর্তারা৷
কিন্তু তার আগেই এ বার চা বাগানে ঝোপঝাড় সাফাইয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে ব্যাপারে পথ খুঁজে বের করতে উদ্যোগী হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ৷ জেলা পরিষদের বন কর্মাধ্যক্ষ গণেশ মাহালি বলেন, “এ নিয়ে আমরা বন দফতর ও বাগান কর্তৃপক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক করব৷ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছে রাজ্যের বনমন্ত্রীকেও৷ উনি ২৬ ফেব্রুয়ারির পর সময় দেবেন বলে জানিয়েছেন৷ সেই মতো বৈঠকটি হবে৷” জেলা পরিষদের মেন্টর মোহন শর্মা বলেন, “চা বাগানে চিতাবাঘের হানা রুখতে ঝোপঝাড় সাফাই-সহ আর কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে বিষয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হবে৷ এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে৷” বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ জানান, “এই বৈঠকের বিষয়টি ইতিমধ্যেই আমায় জানানো হয়েছে৷ ২৬ ফেব্রুয়ারির পর আমি অবশ্যই যাব৷”