প্রতীকী ছবি।
সরাসরি কোনও ক্ষোভ প্রকাশ করেননি। তবে ‘কোচবিহার’ নিয়ে যে তিনি তেমন সন্তুষ্ট নন, প্রশাসনিক বৈঠকে সে কথা বারেবারেই বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় কোচবিহার, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে কোচবিহার জেলা পরিষদের সহকারী সভাপতি পুষ্পিতা ডাকুয়াকে সামনে রেখে কাজ করার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে জেলাশাসক পবন কাদিয়ানকে ‘প্রোঅ্যাকটিভ’ হওয়ার নির্দেশও দেন। পাশাপাশি জেলার বিধায়কদের আরও বেশি উন্নয়নমূলক কাজের প্রচারে নামতে বললেন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উমাকান্ত বর্মণের শরীর খারাপ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনার যদি শরীর খারাপ হয়, আপনি পুষ্পিতাকে সামনে রেখে কাজ করবেন। ওকে বেশি করে কাজে লাগান। তাহলে কাজগুলো হয়ে যাবে। না হলে কিন্তু কাজগুলো হবে না। ডিএমকে বলছি দেখবার জন্য। ডিএমকে একটু প্রোঅ্যাকটিভ হতে হবে।”
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনটি তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে কোচবিহার তৃণমূলের ঘাঁটি বলেই পরিচিত। তা পুনরুদ্ধারে সেই থেকেই জোর দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের সভাধিপতির কাজে খুব সন্তুষ্ট নন মুখ্যমন্ত্রী। মনে করা হচ্ছে, সহকারী সভাধিপতির গুরুত্ব বাড়িয়ে কাজে আরও গতি আনতে চাইছেন তিনি। পাশাপাশি, পরিযায়ী শ্রমিকেরা যাতে সবাই কাজ পান, সে বিষয়েও জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন। ১০০ দিনের কাজ নিয়েও খুব খুশি নন মুখ্যমন্ত্রী। ওই কাজে আরও গতি আনার কথা জেলাশাসককে জানান তিনি। পাশাপাশি, গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের দাবিপত্র হাতে নিয়ে প্রত্যেকটি বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। ২০০টি রাজবংশী প্রাথমিক স্কুল নিয়ে শিক্ষা দফতর দেখবে বলে জানিয়ে দেন। সেই সঙ্গে রাজবংশী ভাষার উন্নয়নে কাজ করার কথাও জানান। কোচবিহারে ভাওয়াইয়া অ্যাকাডেমি গড়ার উপরেও জোর দেন। রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি এবং রাজবংশী উন্নয়ন বোর্ড মিলিয়ে ১৫ কোটির অনুদান তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলা কোচবিহার। সেই জেলায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। সেই পরিসংখ্যানও তুলে ধরার জন্য জেলার বিধায়কদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহারে বিমান চালু হওয়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিমানবন্দরের পরিকাঠামো তৈরির কাজ আমরা করে দিয়েছি। বাকি কাজ কেন্দ্রীয় সরকারের।” পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় যাতে কোনও গন্ডগোল না হয় সেজন্য পুলিশকে সতর্ক করেন তিনি। নজরদারি বাড়ানোরও নির্দেশ দেন।