শুশ্রূষা: দীর্ঘ পথ শুকনো খাবার খেয়ে চালিয়ে মালদহ টাউন স্টেশনে নেমেই ছোট্ট মহিমাকে খাওয়াতে ব্যস্ত তার পরিবারের লোকেরা। নিজস্ব চিত্র
দু’দিনের ট্রেন সফরে মিলেছে ছোলা-মুড়ি, শুকনো রুটি। মা, বাবার সঙ্গে সে সব খেয়েই কাটিয়েছে দু’বছরের মহিমা খাতুন। বুধবার সকালে মালদহ টাউন স্টেশনে ফিরে মেয়ের জন্য খাবার জোগাড় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কোচবিহারের দম্পতি মনিরুল ইসলাম ও ইয়াসমিন খাতুন। ইয়াসমিন বলেন, “ট্রেনে তো দুধ মিলবে না। রেল কর্তৃপক্ষের উচিত দীর্ঘ ট্রেন সফরে শিশুদের কথাও ভেবে দেখা।”
ইয়াসমিনের মতোই শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে খাবার, গন্তব্যে পৌঁছনো নিয়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই। এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ রাজস্থান থেকে মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছয় শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন। তাতে মালদহ, দুই দিনাজপুর ছাড়াও ছিলেন কোচবিহার, জলপাইগুড়ির শতাধিক মহিলা-পুরুষ।
প্রচণ্ড গরমে দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য স্টেশন সংলগ্ন বটগাছের নীচে অপেক্ষা করতে হয়েছে কোচবিহারের দিনহাটার সিনাত বিবিকে। তিনি বলেন, “১ জুন রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ট্রেনে উঠেছিলাম। প্রায় ৪০ ঘণ্টার ট্রেন সফরে শুধু শুকনো খাবারই মিলেছে।” ওই ট্রেনের যাত্রী আমিনুল বিবি বলেন, “মাঝপথেই আমাদের নামিয়ে দেওয়া হল। বাড়ি তখনও অনেক দূর।” জেলা প্রশাসনের তরফে কোচবিহার, জলপাইগুড়ির পরিযায়ী শ্রমিকদের বাসে গন্তব্যে পৌঁছনো হয়।
ভিন্ রাজ্য থেকে মালদহে ট্রেন আসছেই। এ দিনও মালদহে পৌঁছয় ২০টিরও বেশি ট্রেন। রাজস্থান, মুম্বই, কেরল থেকে ট্রেনে শ্রমিকেরা ফিরছেন। মালদহ স্টেশনে দিনে কমপক্ষে ১৫০টি করে বাস প্রয়োজন হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন মালদহের প্রশাসনের কর্তারা।
পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, ভিন্ রাজ্য থেকে ট্রেনে ফিরতে দুই থেকে আড়াই দিন সময় লাগছে। ট্রেন পরিষ্কার করা তো দূরের কথা, ঠিক মতো খাবারও মিলছে না। মনিরুল ইসলাম নামে এক শ্রমিক বলেন, “শৌচাগারের গন্ধে কামরায় বসে থাকা দায়।”
পূর্ব রেলের আইআরসিটিসি-এর গ্রুপ ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র বলেন, “ট্রেনে ট্রেনে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিয়মিত খাবারও দেওয়া হচ্ছে।”