বাগডোগরা বিমানবন্দর। প্রতীকী চিত্র।
উত্তরবঙ্গকে সামনে রেখে ভারত বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্য এবং পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থাকে জোরদার করতে দু’তরফে প্রচেষ্টা শুরু হল। এর অন্যতম হিসেবে ঢাকা থেকে রংপুর হয়ে বাগডোগরা বিমানবন্দর অবধি বিমান চলাচল ব্যবস্থাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত সপ্তাহে এখানকার বণিকসভা কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের (সিআইআই) প্রতিনিধিদের সঙ্গে রংপুরে সংগঠন, রংপুর চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের বৈঠক হয়েছে। এ সপ্তাহেই আবার রাজ্যের পূর্বাঞ্চলের সিআইআই প্রতিনিধিদল বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকা, চট্টগ্রাম যাচ্ছেন। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব আছেন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সিইও চন্দ্রশেখর ঘোষ। সেখানে বিমান পরিষেবা ছাড়াও আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা।
শিল্প সংগঠন, পর্যটন সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, উত্তরবঙ্গের চ্যাংরাবান্ধা, হিলি ও ফুলবাড়ির বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে দু’দেশের বর্হিবাণিজ্য চলছে। ব্যবসা ছাড়াও একটি বাংলাদেশি নাগরিকদের অনেকে গোটা বছর দার্জিলিং, কালিম্পং, ডুয়ার্স ঘুরতে আসেন। দীর্ঘদিন পর সিকিমে ঢোকার ছাড়পত্র মেলায় সে রাজ্যেও এখন যাচ্ছেন তাঁরা। বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
আবার ওপারের অনেকেই নিয়মিত শিলিগুড়িতে আসেন চিকিৎসার কাজে। একই ভাবে উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ মানুষের স্মৃতিতে জড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশে। তাঁরাও সহজে বাংলাদেশে যেতে চান। সেই জায়গা থেকে ঢাকা-শহিদপুর (রংপুর)-বাগডোগরা, ঘণ্টাখানেকের বিমান চললে দুই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও মজুবত হবে।
গত সপ্তাহে রংপুরে যে ভারতীয় প্রতিনিধিদল গিয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন সিআইআই নর্থবেঙ্গলের জ়োনের ভাইস চেয়ারম্যান সঞ্জিৎ সাহা। চন্দ্রশেখরবাবুর প্রতিনিধি দলেও তিনি যাচ্ছেন। সঞ্জিৎবাবু বলেন, ‘‘সম্পর্ক আরও মজবুত করতে আমরা দু’পক্ষ একসঙ্গে কাজ শুরু করছি। রংপুরের পর এ বার ঢাকা, চট্টগ্রামে বৈঠক হবে। বর্হিবাণিজ্যে পণ্যের সংখ্যা বাড়ানো, নিয়মিত দুই তরফে ব্যবসায়ীদের বৈঠক, ভিসা অন অ্যারাইভাল ছাড়াও শিল্প বিকাশের অন্যতম বিষয়, নিয়মিত বাগডোগরা থেকে ঢাকা বিমান যোগাযোগ রয়েছে আলোচনার তালিকায়। বাংলাদেশের একটি বিমান সংস্থা উৎসাহ দেখাচ্ছে।’’
সঞ্জিৎবাবু আরও বলেন, ‘‘দ্রুত যাতে বিমানের বিষয়টি কার্যকরী হয়, তাই দুই দেশেই সরকারি স্তরে বিষয়টি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’
বর্তমানে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে একটিই আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল করে। সেটি সপ্তাহে তিনদিন ভুটানের পারো থেকে বাগডোগরা হয়ে ব্যাঙ্কক যাতায়াত করে। গত বছরের আগে বাগডোগরা থেকে নেপালের কাঠমান্ডুগামী আর একটি বিমান চালু হয়েছিল। কিন্তু পরে ‘অপারেশনাল’ সমস্যা জেরে আপাতত তা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বার বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের পালা।
বিমানবন্দরের এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার অফিসারেরা মনে করেন, বিমানবন্দর সম্প্রসারণ এবং আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার কাজ আগামী বছর শুরু হয়ে যাবে। তাতে দেশীয় বিমান যোগাযোগ ছাড়া আন্তর্জাতিক উড়ান বাড়বে। সেখানে প্রথমে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ নেপাল-বাংলাদেশের বিমান থাকলে তা ধরে নেওয়াই যায়।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবার বাংলাদেশের সরকারিস্তরের এক প্রতিনিধিদলের সড়কপথে শিলিগুড়ি আসার কথা। ঢাকা থেকে সরাসরি শিলিগুড়ি বাস সার্ভিস চালু হওয়ার কথা। তার পরে ছোট গাড়িতে পাহাড়ের দার্জিলিং এবং গ্যাংটককে জোড়া হবে। সেই সড়ক পরিবহণের যাতায়াতের পথ দেখতেই বাংলাদেশের দলটির আসছে।