—প্রতীকী চিত্র।
টাকা ধার না পেয়ে দিদির ছেলেকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠল বোন ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। শনিবার অপহরণ করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বছর দশেকের ওই বালককে কালিম্পং থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় ওই ছেলেটির মাসি ও তাঁর প্রেমিককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, জামাইবাবু টাকা ধার না দেওয়ায় ভাগ্নেকে অপহরণ করে ৫০ লক্ষ টাকার মুক্তিপণ চেয়েছিল ওই মহিলা। ধৃত মহিলার নাম শম্পা সাহা ও সুজিত দেবনাথ। দু’জনেই উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, আশিঘর ফাঁড়ির উত্তর শান্তিনগরের বাসিন্দা ওই ছেলেটির পরিবার। তর বাবা কাপড় ব্যবসায়ী। তাঁর কাছে কিছুদিন আগে তাঁর ছোট শ্যালিকা শম্পা সাহা কিছু টাকা ধার চায়। কিন্তু তিনি তা দিতে রাজি হননি বলেই ছক কষে শনিবার অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। বাচ্চাটির মা জানান, শনিবার বিকেলে বাড়ির কাছেই দিদির সঙ্গে খেলছিল সে। তখনই সেখানে আসে শম্পা। বাচ্চাটিকে চকোলেট দিয়ে শম্পা সঙ্গে নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। তারপর থেকেই বাচ্চাটিকে খুঁজে পাচ্ছিল না পরিবার। প্রায় তিন ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পরে না পেয়ে সন্ধ্যায় আশিঘর ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন বাচ্চাটির বাবা ও মা। তারপরেই আশিঘর ফাঁড়ির ওসি পার্থসারথি দাস বাচ্চাটির বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে তাঁদের বাড়িতে যান। ঠিক তখনই বাচ্চাটির বাবার মোবাইলে মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে। পুলিশ জানিয়েছে, ফোনটি করেছিল শম্পার প্রেমিক প্রেমিক সুজিত দেবনাথ। তখন ফোন পেয়েই তা ওসির হাতে তুলে দেন বাচ্চাটির বাবা। তারপরে ওসি বাচ্চাটির বাবা সেজে অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন খোঁজ করেই অভিযুক্তদের বের করা গিয়েছে। পুলিশের দাবি, একটি খবরের চ্যানেলের স্টিকার লাগিয়ে বেহুঁশ বাচ্চাটিকে স্কুটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কালিম্পংয়ে।
শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনার ১৮ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ বাচ্চাকে খুঁজে বের করেছে, অভিযুক্তরা জাল পরিচয়পত্র দিয়ে আর কোনও অপরাধ করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানায়, একটি চ্যানেলের স্টিকার লাগিয়ে সাংবাদিকের ভুয়ো পরিচয়পত্র নিয়ে শম্পা ঘুরে বেড়াত বলে অভিযোগ। তার বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘিতে। শিলিগুড়িতেও বিভিন্ন সময়ে সে ভাড়া থেকেছে বলে দাবি পুলিশের। তার প্রেমিক অভিযুক্ত সুজিত দেবনাথের বাড়ি ইসলামপুরে। সে নিরাপত্তারক্ষী। রবিবার কালিম্পংয়ের একটি হোটেলে হানা দিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ। বাচ্চাটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে, তাকে শিশু সুরক্ষা কমিটির কাছে পেশ করা হচ্ছে।
বাচ্চাটির মা বলেন, ‘‘যে এই কাজ করতে পারে, সে অনেক কিছু পারে। শম্পাকে আর বোন বলে মানি না। তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চাই।’’