নিজস্ব চিত্র
কাঁচিতে হাত কেটে যাওয়ায় হাসপাতালে টিটেনাস নিতে গিয়েছিলেন মহিলা। ‘ভুলবশত’ তাঁকে দেওয়া হল কুকুরে কামড়ানোর ইঞ্জেকশন। এর পর বাড়ি ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন ওই মহিলা। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক সদর এলাকায়। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়েরা। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বিদ্ধ হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সেলাইয়ের কাজ করার সময় কাঁচিতে হাতের তালু কেটে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে টিটেনাস নিতে গিয়েছিলেন কলমপাড়ার বাসিন্দা সঙ্গীতা গুপ্ত। সেই সময় এক কর্তব্যরত নার্স সঙ্গীতার হাতে পর পর দুটি ইঞ্জেকশন দিয়ে দেন। এর পর আবার এক জন নার্স তৃতীয় ইঞ্জেকশন দিতে এলে সন্দেহ হয় সঙ্গীতার। ইঞ্জেকশন দিতে বাধাও দেন তিনি। জিজ্ঞাসা করেন, কেন তাঁকে তিন-তিনটে ইঞ্জেকশন দেওয়া হচ্ছে? তখনই তিনি জানতে পারেন, আগের নার্স তাঁকে ‘ভুলবশত’ কুকুরে কামড়ানোর ‘অ্যান্টি রেবিস ইঞ্জেকশন’ দিয়ে দিয়েছেন। এর পর তৎক্ষণাৎ হাসপাতালের চিকিৎসক অমল কৃষ্ণ মণ্ডলের কাছে ছুটে যান সঙ্গীতা। তাঁকে পরে টিটেনাস দেওয়া হলেও জানিয়ে দেওয়া হয়, শুক্রবার আবার হাসপাতালে এসে আরও একটি ইঞ্জেকশন নিতে হবে সঙ্গীতাকে।
সঙ্গীতা জানান, এর পর বাড়ি অসুস্থ বোধ করতে থাকেন তিনি। বেশ কয়েক বার বমি হয়। মাথা ঘুরেও পড়ে যান সঙ্গীতা। ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার কারণেই সঙ্গীতা অসুস্থ হয়েছেন বলে দাবি তাঁর পরিবারের। এই ঘটনা এলাকায় হতেই হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়দের একাংশ। স্থানীয় বাসিন্দা পূর্ণিমা সাহা বলেন, ‘‘রোগীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সঙ্গীতার কিছু হয়ে গেলে তার দায় কে নিত?’’
এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে ওই এলাকায়। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কিসান কেডিয়া বলেন, ‘‘রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। হয় ভুল চিকিৎসায় না-হয় বিনা চিকিৎসায় মানুষ মারা যাচ্ছে। ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওই মহিলা।’’ এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা যুব তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, ‘‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেই সময় কুকুর বিড়ালে কামড়ানোর ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছিল। তাই গন্ডগোল হয়েছে।’’ যদিও মুখে কুলুপ এঁটেছেন হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।