মঙ্গলবার রাতে কালিয়াচকে পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় গ্রামবাসীদের। — নিজস্ব চিত্র।
মালদহের কালিয়াচকে পরকীয়া সন্দেহে এক যুগলকে মারধরের অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। সালিশি সভা বসিয়ে ওই যুগলের ‘শাস্তি’ নির্ধারণ করা হয় বলে অভিযোগ। তার পরেই শুরু হয় মারধর। আটকাতে গেলে পুলিশের উপরেই পাল্টা চড়াও হন গ্রামের লোকজন। পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কালিয়াচকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শেরপুর গ্রামের ঘটনা। গত মঙ্গলবার রাতে সেখানেই এক যুগলকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গ্রামের সালিশি সভা সেই ‘শাস্তি’র নিদান দিয়েছিল তাঁদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কালিয়াচক থানার আইসি সুমন রায়চৌধুরী। তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের কাজে বাধার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত তিন জনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবারের ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আমবাগানে দাঁড়িয়ে এক যুগলকে কথা বলতে দেখে গ্রামের লোকজন সন্দেহ করেন, তাঁদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। যুগলকে আটক করে রাস্তায় নিয়ে আসা হয়। বসে সালিশি সভা। তার নিদান অনুযায়ী, ওই যুবক এবং তরুণীকে রাস্তার ধারের একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে ফেলা হয়। শুরু হয় মারধর। খবর পেয়ে রাতেই গ্রামে পৌঁছয় কালিয়াচক থানার পুলিশ। কিন্তু যুগলকে উদ্ধারে তাদের বাধা দেওয়া হয়।
উত্তেজিত জনতার সঙ্গে কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। অভিযোগ, পুলিশের উপর হামলা চালানো হয়। পুলিশকর্মীদেরও লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করেন গ্রামবাসীরা। ছোড়া হয় ইট। আইসির গাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। পাল্টা লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। যুগলকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। নিগৃহীতা তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। পথে যুবকের সঙ্গে দেখা হয়। যুবক তাঁর পূর্বপরিচিত হওয়ায় তাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন তরুণী।
মঙ্গলবারের ঘটনা প্রসঙ্গে আইসি সুমন বলেন, ‘‘যুগলকে মারধরের খবর পেয়ে পুলিশ শেরপুর এলাকায় গিয়েছিল। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা করতেই পুলিশের উপর চড়াও হন বেশ কয়েক জন। প্রত্যেকের হাতে ধারালো অস্ত্র, পাথর এবং লাঠি ছিল। ইটের আঘাতে গুরুতর জখম হন এক পুলিশকর্মী। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় তিন জনকে আটক করা হয়েছে।’’