পেঁয়াজে এখনও হাত দেওয়া যাচ্ছে না। হাত খুলে অন্য আনাজও কিনতে গিয়েও কয়েকবার মাথা চুলকোতে হচ্ছে গৃহস্থকে। শহর তো বটেই, গ্রামের বাজারেও একই অবস্থা।
কোচবিহার-সহ গোটা উত্তরবঙ্গে একই অবস্থা। পেঁয়াজে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রসুন, আদার দামও। কেজি প্রতি পেঁয়াজ ১২০ টাকা। এক কেজি রসুনের দাম ২৫০ টাকা, আদা ১৩০ টাকা। সেই সঙ্গেই কেজি প্রতি বেগুন ৩০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ২৫ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, মটরশুটি ৬০ টাকা। নতুন আলু ৩০ টাকা, করলা ৬০, ব্রকোলি একটি ১৫ টাকা, লাউ একটি ১০-১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শাকের দামে কিছুটা কমেছে।
কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি চাঁদমোহন সাহা রবিবার বললেন, “পেঁয়াজ বাইরে থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আর অন্য আনাজের দাম মোটামুটি ঠিকই রয়েছে।” তাঁর দাবি, কিছুদিনের মধ্যে তা আরও কমে যাবে। পেঁয়াজের দাম কবে নাগাদ কমতে পারে, তা নিয়ে অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
বাজারমুখো স্থানীয় লোকজন জানাচ্ছেন, এবার শীতের শুরু থেকেই আনাজের দাম আকাশছোঁয়া। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। শীত বাড়ছে। তাপমাত্রা কমছে। কিন্তু আনাজের আগুনদাম কমছে না।
জেলা কৃষি দফতর থেকে পাওয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে প্রায় চল্লিশ হাজার হেক্টর জমিতে আনাজ চাষ হয়। পেঁয়াজ, রসুন, আদাও হয় কোচবিহারে। যদিও তা পরিমাণে অনেকটাই কম। পেঁয়াজ মূলত আসে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে। সেখানে পেঁয়াজের উৎপাদন মার খেলেই প্রভাব পড়ে স্থানীয় বাজারে। এবারেও তাই হয়েছে। স্থানীয় পেঁয়াজ উঠলে দাম কিছুটা পড়বে আশা করলেও আখেরে তা হয়নি। পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকায় এসে আবার বেড়ে যায়।
কোচবিহারের বাসিন্দা তপন দে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই আনাজের দাম এবারে অনেকটাই বেশি। শীতের আনাজ বাজারে এলেও তাতে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। দাম এবারে অনেকটাই বেশি।”
কৃষকদের দু’টি অংশ দু’ভাগে আনাজ চাষ করেন। একটি অংশ অক্টোবরেই চাষ শুরু করে দেন। আরেকটি অংশ নভেম্বরের শেষদিক থেকে চাষ শুরু করে। যাঁরা প্রথমদিকে চাষ করেছেন, তাঁরা আনাজের দাম ভাল পাচ্ছেন। কৃষকদের দাবি, দুই সপ্তাহের মধ্যে আনাজ আরও বেশি পরিমাণে বাজারে আসবে।
ফার্মার্স ক্লাব সাতমাইল সতীশের সম্পাদক অমল রায় বলেন, “এখন পর্যন্ত চাষিরা ভাল দাম পাচ্ছেন। তবে আর কিছুদিন পরে সেই দামে অর্ধেক হয়ে যাবে।’’