প্রতীকী ছবি।
সিল করে রাখা পানশালার গায়িকাদের মূলস্রোতে ফেরাতে সরকার কী করছে, জানতে চাইল হাইকোর্ট। সোমবার জলপাইগুড়ি পানশালা কাণ্ড নিয়ে দায়ের হওয়া দু’টি রিট আবেদনের শুনানি ছিল হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে। সেখানেই এই প্রসঙ্গ ওঠে। সরকারের হয়ে সওয়াল করতে এসেছিলেন খোদ অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত।
সওয়াল চলাকালীন অ্যাডভোকেট জেনারেলকে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য বলেন, “একটা কথা জানতে চাইছি, আপনার ভূমিকা থেকে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বলুন। ওদের (সিল করা পানশালার গায়িকাদের) মূলস্রোতে ফেরানোর জন্য সরকার কিছু ভাবছে?” উত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের উল্লেখ করেন।
১৬ জুলাই জলপাইগুড়ির থানামোড়ে তৃণমূল নেতা ধর্ম পাসোয়ানের পানশালায় অভিযান চালিয়ে সিল করে দিয়েছিল পুলিশ। তাদের দাবি, পানশালার এক গায়িকা অভিযোগ করে জানিয়েছিলেন পানশালায় তাঁদের দিয়ে জোর করে যৌনব্যবসা করানো হত। তার ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়।
এ দিকে ওই গায়িকাই হাইকোর্টে রিট মামলা দাখিল করে দাবি করেন, তাঁকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে পুলিশ মিথ্যে মামলা দায়ের করেছে। পানশালার লাইসেন্স রয়েছে ধর্ম পাসোয়ানের স্ত্রী ফুলকুমারীর নামে। তিনিও একটি রিট আবেদন দাখিল করে
পানশালা খুলে দেওয়ার আবেদন করেন। এ’দিন দু’টি মামলার শুনানি ছিল। গায়িকা আইনজীবী কল্লোল বসু সিঙ্গল বেঞ্চকে জানান, “গায়িকারা যে বাড়িতে থাকতেন পুলিশ সেটিও সিল করেছে। এদের এখন রোজগার নেই। সামাজিক ভাবে এবং পুলিশের হাতে হেনস্থা হতে হচ্ছে এঁদের।” তার প্রেক্ষিতেই বিচারপতি গায়িকাদের পুনর্বাসন নিয়ে প্রশ্ন করেন।
এ দিন মামলায় মুম্বইয়ে ডান্সবার বন্ধ হওয়ার প্রসঙ্গও ওঠে। ডান্সবার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কয়েকশো মহিলা কাজ হারিয়েছিলেন বলে জানান আইনজীবীরা। মহিলাদের ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গ ওঠায় অ্যাডভোকেট জেনারেল মন্তব্য করেন, “মহিলারা নিজেরাই এগিয়ে যাচ্ছেন, মহিলাদের শুধু মুক্ত পরিবেশ দিতে হবে।“
বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের মন্তব্য “সঙ্গে কর্মসংস্থান এবং আশ্রয়ও চাই।” কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গ তোলেন ফুলকুমারীর আইনজীবী আনন্দ শাহও। তাঁর যুক্তি পানশালা সিল করায় অন্তত ৩০ জনের রোজগার বন্ধ হয়ে রয়েছে।
অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, “ওই পানশালাতেই যাবতীয় দুষ্কর্ম হতো। সেটি খুলে দিলে বহু প্রমাণ লোপাট হতে পারে। তদন্ত বিঘ্নিত হবে।” আগামী বুধবার দু’টি মামলার রায় জানাবেন বিচারপতি।