পাহাড়ে সংগঠন বাড়াতে তৃণমূলের একাংশ নেতা ভোটে একা লড়াইয়ের কথা বলেছেন। প্রতীকী চিত্র।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, রাজ্যের অন্য প্রান্তের সঙ্গে দার্জিলিং পাহাড়েও প্রায় দু’দশক পরে পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে। এর মধ্যে দার্জিলিং ও কালিম্পঙে দলগুলির মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে৷ দলগুলি নিয়মিত সভা, বৈঠক করছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, পাহাড়ে সংগঠন বাড়াতে তৃণমূলের একাংশ নেতা ভোটে একা লড়াইয়ের কথা বলেছেন। দার্জিলিং লাগোয়া বিজনবাড়ি, সুখিয়াপোখরি লাগোয়া এলাকার এই নেতারা একা চলার কথা বলায় কিছুটা ‘অস্বস্তিতে’ পাহাড়ের তৃণমূল নেতৃত্ব৷ অনীত থাপার নেতৃত্বাধীন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সঙ্গে জোটের বদলে তাঁরা একলা চলতে চাইছেন৷ আর তাতেই দলের মধ্যে নানা মতামতউঠে আসছে।
রাজ্যসভায় সাংসদ তথা পাহাড় তৃণমূলের সভানেত্রী শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্য নেতৃত্ব ভোটের রণনীতি ঘোষণা করবেন। সেখানে জোট, আসন সমঝোতা থাকতে পারে। তার আগে, প্রকাশ্যে তা বলাটা ঠিক নয়।’’ তিনি জানান, দলের একাংশ একা ভোটে লড়াইয়ের কথা বলেছেন বলে শুনেছি। দলের অন্দরে নানা মতামত হলে ঠিক আছে। প্রকাশ্যে এ সব বলায় তাদের সতর্ক করা হয়েছে। দলীয় অনুশাসনের বিপক্ষে গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দলীয় সূত্রের খবর, ২০১১ সালের পরে, পাহাড়ে তৃণমূল একা লড়াই করে মিরিক পুরসভা দখল করেছিল। এ ছাড়া, পুরভোটে প্রতিটি পুরসভায় কয়েকটি করে আসন পেয়েছে। জিটিএ ভোটেও তৃণমূল আসন জিতেছে। প্রার্থী দিয়ে বিরাট সাফল্য লোকসভাতেও মেলেনি। প্রতি বারই জিএনএলএফ, জনমুক্তি মোর্চা বা বর্তমানে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সমর্থন তৃণমূল বিভিন্ন সময়ে পেয়েছে। জিটিএ ভোটেও অনীতেরা তৃণমূলকে নানা ভাবে সাহায্য করেছেন। গত ২০২১ সাল থেকে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সঙ্গেই সমঝোতা করে দল চলছে। অনীত থাপার সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুসম্পর্কের কথা পাহাড়ে সবাই জানেন। সেখানে দার্জিলিং পুরসভায় দুই দল জোট করে হামরো পার্টিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের মতো প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার একাংশও ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ লড়াই করার পক্ষপাতী। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোট একেবারে গ্রামীণ নিচু স্তরে হবে। সেখানে নিজেদের সংগঠন মজবুত করা খুবই জরুরি। আবার পাহাড়ে বহুমুখী লড়াই পঞ্চায়েত ভোটে হবে বোঝাই যাচ্ছে। বিজেপি, জিএনএলএফ, জনমুক্তি মোর্চাও ময়দানে রয়েছে। সেখানে একা লড়ে ক্ষমতা দখল করাটা বেশি জরুরি। আর এক দলের বক্তব্য, জিটিএ-র এলাকার পাহাড় ও সমতলে কিছু আসন রয়েছে। সেখানে আসন সমঝোতা হতে পারে। তাতে রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায়ও থাকবে। আর দুই দশক পরে,দুই দলই পাহাড়ে প্রথম বার পঞ্চায়েত ভোটে লড়বে। তাই সংগঠন মজবুত করার বিষয় থাকছে।
এই নিয়ে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘তৃণমূল আলাদা দল। ওদের দলীয় বিষয় নিয়ে কিছু বলতে পারব না। আমরা আমাদের ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। ভোট ঘোষণা হোক, তখন সব পরিষ্কার হবে।’’