প্রতীকী ছবি
লকডাউনের মাঝেই সোমবার থেকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার। সেই মতো এ দিন গৌড়বঙ্গের তিন জেলায় ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ থেকে শুরু করে কৃষি ও কৃষিনির্ভর শিল্পের কাজ চালু হয়। প্রশাসনের বক্তব্য, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই হয় সমস্ত কাজকর্ম।
মালদহ
সোমবার থেকে মালদহের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু করল প্রশাসন। কালিয়াচক ৩ ব্লকের বেদরাবাদ এবং গাজল ব্লকের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে এ দিন দু’টি প্রকল্পে কয়েক জন শ্রমিক সামাজিক দূরত্ব রেখেই কাজ করেন। গাজলে দু’টি পাটকলেও কাজ হয়। চালু হয় হিমঘরও। জেলায় কৃষিকাজও এ দিন স্বাভাবিক ভাবেই হয়েছে। তবে খুব কম সংখ্যক কৃষক মাঠে নামেন। ইটভাটা চালু হওয়ার কথা থাকলেও এ দিন জেলার কোনও ইটভাটায় কাজ হয়নি।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বেদরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতে এ দিন নার্সারি পরিচর্যার কাজ হয়। পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েতে আদিনা ইকো পার্কের পরিচর্যার কাজ হয়। মঙ্গলবার থেকে কালিয়াচক ২ ব্লকের রাজনগর ও পঞ্চানন্দপুর ১ পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের প্রকল্পে ‘মিশন মিলিয়ন ড্রিম’ প্রকল্পে কাজ হবে। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক অশোককুমার মোদক বলেন, ‘‘সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ যেন হয় তা দেখতে বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
উত্তর দিনাজপুর
জেলা প্রশাসনের তরফে ন’টি ব্লকের ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ২০২০-২১ আর্থিক বর্ষের একশো দিনের প্রকল্পের কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলায় ওই প্রকল্পের আধিকারিক শুভ্রজিৎ গুপ্তের বক্তব্য, রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লকের ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে দ্রুত ১০০ দিনের প্রকল্পে পুকুর, খাল, সেচের নালা খনন, নদীবাঁধ সংস্কার ও জমি সমান করার কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জেলায় ওই প্রকল্পের অধীনে জবকার্ডধারী প্রায় আড়াই লক্ষ শ্রমিক রয়েছেন। লকডাউনের জেরে চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত জেলায় একশো দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। শুভ্রজিৎ জানান, সরকারি নির্দেশে চলতি আর্থিক বছরে জেলায় একশো দিনের প্রকল্পে আপাতত ৭৬ লক্ষ কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
রায়গঞ্জের কমলাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রশান্ত দাসের দাবি, মঙ্গলবার থেকে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একশো দিনের কাজ শুরু করা হবে।
দক্ষিণ দিনাজপুর
ঘরে বসে উপভোক্তাদের ১০০ দিনের প্রকল্পে বেশি করে কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। সামাজিক দূরত্বকে গুরুত্ব দিতে প্রশাসনের এমন উদ্যোগ। জেলার ৮টি ব্লকের গ্রামপঞ্চায়েতগুলিতে জবকার্ডধারীদের ফর্ম পূরণের প্রক্রিয়া এ দিন থেকে শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, কাজের ধরণ ও সম্ভাব্য শ্রমদিবস তৈরি করে বাজেট বরাদ্দ করে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রণবকুমার ঘোষ জানান, জেলা জুড়ে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে এক-দু’দিনের মধ্যে ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে। বোরো ধান চাষের পরে মাঠের কাজকর্ম প্রায় নেই। লকডাউনের জেরে কর্মহীন হয়ে পড়া বাসিন্দারা ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজের সুযোগ পাবেন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ঘরে বসে মাশরুম চাষ, নার্সারি এবং বাংলা আবাস যোজনায় প্রাপ্ত বাড়ি তৈরিতে ১০০ দিনের প্রকল্পে উপভোক্তাদের যুক্ত করা হয়েছে।