শনিবারের অনুষ্ঠানে বিমল গুরুং। —নিজস্ব চিত্র
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-কেই সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে সেই ‘ভুল’ শুধরে নিতে চান বিমল গুরুং। তাই পাহাড় থেকে বিজেপি-কে শিকড়-সুদ্ধ উপড়ে ফেলার ডাক দিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, তৃতীয় বারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চান বলেও জানিয়ে দিলেন।
শনিবার দুপুরে নাগরাকাটার ভগৎপুর চা-বাগানে একটি সংবর্ধনা সভায় অংশ নেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সুপ্রিমো গুরুং। সেখানেই বিজেপি-কে উৎখাত করার ডাক দেন তিনি। গুরুং বলেন, ‘‘বিজেপি আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ওদের উচিত শিক্ষা দিতেই হবে। তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’’
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মনোজ মুন্ডা, জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ গণেশ ওঁরাও-সহ তৃণমূলের অন্য নেতারাও ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে অনুরোধ জানান গুরুং। নির্বাচনী কৌশল নিয়ে গণেশের বাড়িতে গুরুং-সহ তৃণমূল এবং গোর্খা জনমুক্তির স্থানীয় নেতারা একদফা বৈঠকও করেন।
ভোটের আগে পাহাড়ে তৃণমূলের হয়ে গুরুংকে প্রচারে অংশ নিতেও যে দেখা যেতে পারে, তা-ও এ দিন কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। রবিবারই আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামে সভা রয়েছে তাঁর। ২ ফেব্রুয়ারি সেখানে বিজেপি সাংসদ জন বারলার বাড়ির সামনেও সভা করার কথা তাঁর।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র বারলার জয়ের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল গোর্খা জনমুক্তির। আগের বিধানসভআ নির্বাচনে মাদারিহাট আসনটিও বিজেপি-কে পেতে তারা সাহায্য় করেছিল। তাই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ডুয়ার্সের বেশ কিছু আসনে নেপালীদের ভোট যে নির্ণায়ক হতে চলেছে, ইতিমধ্যেই তা পরিষ্কার। তাই গোর্খা নেতৃত্বকে পাশে পেতে তৃণমূলের তরফেও চেষ্টায় কোনও খামতি নেই। জোড়াফুলকে সমর্থন জানিয়েই সম্প্রতি পাহাড়ে ফিরেছেন মোর্চা নেতারা। আর ফিরেই ‘ভুল’ শুধরে নিতে চাইছেন।
এদিকে নেপালিদের ভোট ডুয়ার্সের বেশ কিছু আসনে যে নির্ণায়ক ফ্যাক্টর তা বলাই বাহুল্য। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী জন বারলার জেতার পিছনেও বিরাট ভূমিকা ছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার। সেইসাথে গত বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট আসনটি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থন নিয়েই জিতেছিল বিজেপি। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও গোর্খা তথা নেপালিদের ভোট যে নির্ণায়ক শক্তি হতে চলেছে সেটা বলা যেতেই পারে।