—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কখনও বীজশোধন না হওয়ায় সমস্যা, তো কখনও রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক না হওয়ার অভিযোগ। তার জেরে প্রায় প্রতি বছরেই আলু চাষ নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় রাজ্যের কোনও কোনও অংশের কৃষকদের। সেই অবস্থার হাত থেকে কৃষকদের রক্ষা করতে আলু চাষ নিয়ে প্রকাশ হওয়া পুস্তিকার প্রচার শুরু করেছে রাজ্য কৃষি দফতর। অনলাইন ওই পুস্তিকা কোচবিহারে চাষিদের হাতে তুলে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও তা প্রচার করা হচ্ছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার আলুর বীজের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। এক দিকে, বীজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা, অন্য দিকে, ভাইরাস-মুক্ত আলু বীজ তৈরি করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ফার্মাস প্রোডিউসার কোম্পানির মাধ্যমে ওই বীজ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কোচবিহারে প্রাথমিক ভাবে চল্লিশ বিঘা জমিতে আলুর ওই বীজ তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে।
কোচবিহারের উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) গোপাল মান বলেন, ‘‘এপিক্যাল রুট কাটিংয়ের মাধ্যমে ওই আলু বীজ তৈরি করা হচ্ছে। যা কৃষকদের আলু বীজ তৈরিতে স্বনির্ভর করবে। সেই সঙ্গে ভাইরাস-মুক্ত আলু বীজ পাওয়া যাবে। তাতে আলুর ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না।’’
কোচবিহারে আলু চাষের উপরে প্রচুর মানুষ নির্ভরশীল। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে প্রায় ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। তার উপরে লক্ষাধিক কৃষক নির্ভরশীল। ওই চাষের জন্য প্রয়োজনীয় আলু বীজের বেশিরভাগই আসে ভিনরাজ্যে থেকে। সেই আলু বীজ ভাইরাস-মুক্ত কিনা, তা কৃষকদের পক্ষে চিহ্নিত করা কঠিন। স্বাভাবিক ভাবেই ওই বীজের কোনও পরীক্ষা ছাড়াই চাষ করেন কৃষকেরা। তাতে প্রায় প্রতি বছর কোনও না কোনও অংশের কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েন। আলু চাষ ক্ষতির মুখে পড়ে।
ওই পুস্তিকায় কী ভাবে আলু বীজ তৈরি করতে হবে, তার রক্ষণাবেক্ষণ করা, ভাইরাস-মুক্ত করার পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কী ভাবে আলু চাষ করতে হবে, কখন কী ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে, তার উল্লেখ করা হয়েছে। আলু গাছ রোগে আক্রান্ত হলে কী কী পদক্ষেপ করতে হবে কৃষকদের, সেটাও ওই পুস্তিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।
কোচবিহারের একটি ফার্মাস ক্লাবের সম্পাদক অমল রায় বলেন, ‘‘আলু চাষের ক্ষেত্রে আলু বীজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আলু বীজ বাইরে থেকে আনতে অতিরিক্ত টাকা যেমন খরচ হয়, তেমনই ভাইরাসের ভয়ও থাকে। সেখানে কৃষি দফতরের ওই উদ্যোগ কৃষকদের পক্ষে লাভবান হবে।’’