জাল: যন্ত্রে সাদা কাগজ দিলেই বার হচ্ছে এমন নোট।
বাক্সের একদিকে সাদা কাগজ ঢোকালে অন্য দিক থেকে বার হয়ে আসছে পাঁচশো, দু’হাজার টাকার নোট! পাচারকারীদের কাছ থেকে পাওয়া মোবাইলে এমন ভিডিয়ো দেখে বনকর্মীদের চোখ কপালে উঠেছে। বন বিভাগ সূত্রে দাবি, পাচারকারীদের সঙ্গে নোট জাল করার চক্রের যোগ থাকার যে সম্ভাবনা রয়েছে, এই ভিডিয়োয় তা প্রমাণ হয়ে যায়। তাদের আরও দাবি, এই জাল অনেকটাই বিস্তৃত। ভিডিয়োটি দেখার পরে বন দফতরের আরও দাবি, তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে মনে হয়, এটা পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অন্য কোনও জায়গার ছবি। তবে সেটা কোথাকার হতে পারে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
বন্যপ্রাণী পাচারে অভিযুক্ত দু’জনকে হেফাজতে নিয়েছিল বন দফতর। তাদের জেরা করে আরও দু’জনকে পাকড়াও করল উত্তরবঙ্গ বন বিভাগের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। ধৃতরা হলেন: কালচিনির বাসিন্দা দীপক প্রধান ও জয়গাঁর বাসিন্দা দীপেন মুখিয়া। ধৃতদের মোবাইল পরীক্ষা করে সেখান থেকে গন্ডারের খড়্গ, প্যাঙ্গোলিনের ছবির সঙ্গে মিলল এই টাকা তৈরির যন্ত্রের ভিডিয়ো। যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ বন দফতরের। এই দলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের যোগ রয়েছে দাবি তাদের। শনিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হয়।
কী দেখা যাচ্ছে সেই ভিডিয়োয়? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে— কাগজের বাক্সে সাদা কাগজ দিলে উল্টো দিক থেকে বার হয়ে আসছে পাঁচশো ও দু’হাজার টাকার নোট। এবং নিমেশের মধ্যে। বন দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, ভিডিয়োয় লোকজনের গলার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। ভিডিয়োটি কোন এলাকার, সেই প্রশ্নই এখন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। বন দফতর সূত্রে দাবি, লোকজনের মুখে কথা শুনে মনে হচ্ছে, সেটা এই রাজ্যের নয়। কারণ, যে ভাষা শোনা যাচ্ছে, তা পশ্চিমবঙ্গের কোনও অঞ্চলের নয়। বরং আশপাশের কোনও এলাকার হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, সব খতিয়ে দেখে তার পরে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে।
এ দিন ধৃতদের এদিন আদালতের সিজিএম কোর্টে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্তদের জেল হেফাজতের নির্দশ দেয়। ফের ২৫ নভেম্বর অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ বন বিভাগের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘‘হেফাজতে থাকা অভিযুক্তদের জেরা করে ওঠে এসেছে আরও দুই অভিযুক্তের নাম। তাদের গ্রেফতার করেই এই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত চলছে।’’