দেহ নিয়ে পারে আসছেন উদ্ধারকারীরা। —নিজস্ব চিত্র
মালদহের মানিকচকে গঙ্গায় ভেসেল দুর্ঘটনার প্রায় ৭২ ঘণ্টা পরে খোঁজ মিলল আরও একজনের দেহের। উদ্ধার হয়েছে তলিয়ে যাওয়া আরও একটি ট্রাক। বৃহস্পতিবারও হদিশ মেলেনি অধিকাংশ ট্রাকেরই। এমনকি, নিখোঁজদের তালিকায় থাকা আরও এক চালকের সন্ধান না মেলায় গঙ্গায় তল্লাশি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তারাচাঁদ যাদব ঝাড়খণ্ডের রাজমহলের তিনপাহাড় এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ভেসেলের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয় মালদহ মেডিক্যালে। ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতের পরিবারের লোকেরা। তাঁদের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে তারাচাঁদ ভেসেলের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। ভেসেল পাড়ে পৌঁছলে তিনি গাড়িগুলি নামাতে সাহায্য করতেন। ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছিল না তাঁর। এ দিন দুপুর ৩টে নাগাদ স্পিডবোট নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। সেই সময়ই ভেসে ওঠে তারাচাঁদের দেহ। এ দিকে, এ দিনও খোঁজ মেলেনি ভেসেলের মধ্যে থাকা গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়া ট্রাকের চালক মন্টু শেখের। তাঁর পরিবারের লোকেরা তিন দিন ধরে নাওয়া-খাওয়া ভুলে ঠায় বসে রয়েছেন গঙ্গাপাড়েই। মন্টুর দিদি আরবিয়া বিবি বলেন, “ভাইকে শেষ দেখা দেখতে পাব কিনা, তাও বুঝতে পারছি না।”
গঙ্গায় ভেসেল দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থোঁজ মিলেছে চারটি ট্রাকের। নিখোঁজ তালিকায় থাকা দুজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “দুর্ঘটনায় সময় ওই দিনই অধিকাংশকে উদ্ধার করা হয়েছিল। দু'জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। আরও এক জনের খোঁজ মিলছে না। তাঁর খোঁজে গঙ্গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।” ঘটনার পরে তিন দিন কেটে গেলেও এখনও কেন তলিয়ে যাওয়া ট্রাকের হদিশ মিলছে না, প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ। এ দিনও উদ্বিগ্ন শয়ে শয়ে মানুষ ভিড় জমান গঙ্গাপাড়ে।
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্তাদের দাবি, “ঘটনাস্থলে গঙ্গার গভীরতা প্রায় ৪০ ফুট। ডুবুরিরা জলের তলায় গিয়ে লোহার তার ট্রাকে বেঁধে দিচ্ছেন। তার পরে ফরাক্কা থেকে আসা ক্রেনের সাহায্যে টেনে তোলা হচ্ছে।” তবে গভীরতা বেশি হওয়ায় ডুবুরিদের তলিয়ে যাওয়া ট্রাকের খোঁজ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে দাবি করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, “লেন্স পরেও জলের তলায় ঠিক মতো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া ঠান্ডাও রয়েছে। ফলে কাজ চালাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।” মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। প্রশাসনের কর্তারা দিনরাত গঙ্গাপাড়ে থেকে উদ্ধারকার্য তদারকি করছেন।”