বালুরঘাট হাই স্কুলে সরস্বতী পুজোর প্রস্তুতি ছাত্রীদের। ছবি: অমিত মোহান্ত
ঘন কুয়াশার চাদরে চাপা পড়ে গিয়েছে পথঘাট, গাছগাছালি। রাস্তার দুধারের শিমূল-পলাশের লালও ফিকে। ভুটান সীমান্তের কুমারগ্রাম তো বটেই, খাস শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডেও বেলা ৮টায় আলো জ্বালিয়ে চলাচল করেছে গাড়ি। জেলা সদর জলপাইগুড়িতেও একই ছবি। আর হাড় হিম করা বাতাসে জবুথবু পাহাড়। তা সত্ত্বেও কিন্তু এতটুকু বিষাদের চিহ্ন নেই উত্তরের পাহাড়-সমতলে। বরং, আজ, বুধবার শুক্লা পঞ্চমীতে দেবী-বন্দনার পরে গরমাগরম সুগন্ধী খিচুড়ির আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে প্রায় সর্বত্র।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কথায়, ‘‘হালকা ঠান্ডা থাকলেই সরস্বতী পুজোটা বেশ উপভোগ করা যায়। এবার তো জমজমাট ঠান্ডা। কাজেই পুজোর খিচুড়ি প্রসাদের টানটা বেড়ে গিয়েছে।’’
উত্তরবঙ্গে এখন সবচেয়ে মুখরোচক আলোচনার বিষয়ই হচ্ছে শীতের দ্বিতীয় ইনিংস। দু’দিন ধরে হিমশীতল হাওয়ার দাপট চলছে। বালুরঘাট গার্লস স্কুল কিংবা কালিয়াগঞ্জ বয়েজ, সর্বত্রই আলমারিতে উঠিয়ে রাখা গরম পোষাক ফের নামিয়ে পড়তে হয়েছে পড়ুয়াদের। জলপাইগুড়ি মহিলা কলেজ কিংবা শিলিগুড়ির প্রথম সারির কলেজও শীতের আলোচনায় জমজমাট। প্রশ্নও একটাই। কতদিন থাকবে এই দামাল শীত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের শিক্ষক সুবীর সরকার বললেন, ‘‘পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণেই আরও দিনদুয়েক এমন চলবে। বেলা ৮-৯টা পর্যন্ত কুয়াশাও থাকবে বেশ কিছু এলাকায়। ঝঞ্ঝা দুর্বল হলেই ফের উষ্ণ হয়ে উঠবে পাহাড়-সমতল।’’
দার্জিলিং পাহাড়ে এ দিন তাপমাত্রার পারদ ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ওঠেনি। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ঘোরাফেরা করেছে। ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে দার্জিলিং ও সিকিমের বেশ কয়েকটি এলাকায়। তাতেই দার্জিলিঙের সান্দাকফু, সিকিমের নাথু লার মতো এলাকায় ফের তুষারপাতের সম্ভাবনা প্রবল হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষ়জ্ঞরা।
রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব কাজের সূত্রে কলকাতায় রয়েছেন। তবে উত্তরবঙ্গের পাহাড়-সমতলের ফের জাঁকিয়ে শীত পড়ার খবরে তিনিও উচ্ছ্বসিত। তাঁর কথায়, ‘‘দ্বিতীয় দফায় শীত একটু বেশিদিন ব্যাট করলে তো ভালই হয়। বরফ পড়লে তো কথাই নেই।’’