প্রতীকী ছবি।
রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার পর দশ মাস কেটে গিয়েছে। এখনও রোগীকল্যাণ সমিতি গড়ে ওঠেনি রাজ্য সরকারের তরফে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ছাড়াও স্থানীয় স্তরে পরিষেবামূলক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল চত্বরে জবরদখল উচ্ছেদের কাজও আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ।
জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনার দাবি, রাজ্য সরকার সমিতি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘‘১৬ সেপ্টেম্বর পুরনো রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠক ডেকেছি। চিকিৎসক, আধিকারিক, নিরাপত্তা এজেন্সির প্রধান ও পুরসভার জন প্রতিনিধিদের একাংশকে ডাকা হয়েছে। সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’
গত ২৬ অগস্ট হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে এক চিকিৎসায় গাফিলতিতে এক রোগিণীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। মৃতার পরিজনেরা নার্সদের একাংশের উপরে হামলা চালান বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পরে নিরাপত্তার দাবিতে তিন দিন প্রশাসনিক আধিকারিকদের দফতরে বিক্ষোভ দেখান নার্সদের একাংশ। অভিযোগ, তার জেরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরিষেবাও ব্যাহত হয়। ৪ সেপ্টেম্বর চিকিৎসকদের একাংশ অধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যক্ষের কাছে লিখিত ভাবে হাসপাতালের সমস্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার দাবি জানান।
ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল ও রায়গঞ্জ মেডিক্যালে দাওয়াই-দাবি
নিরাপত্তা ব্যবস্থা যা করার দাবি
• জরুরি বিভাগে কোলাপসিবল গেট বসানো
• সব বিভাগে ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা বসাতে হবে (মেডিক্যালে)
• নিরাপত্তা রক্ষী থাকতে হবে জরুরি বিভাগে (মেডিক্যালে)
• পুলিশ পিকেট রাখতে হবে হাসপাতালের গেটে ঢোকার মুখে
• বাইরের গাড়ি বিশেষ করে টোটো জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ন্ত্রণ।
• অবৈধ দোকান সরানো
যা হয়েছে
• ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে সিভিক ভলান্টিয়ার ছিল, পুলিশ পিকেট বসল শনিবার থেকে
• ৪২টি ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে সব বিভাগে, হাসপাতাল চত্বরে
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, রোগীকল্যাণ সমিতি না থাকায় চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কী করণীয়, সে ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে বা পদক্ষেপ করতে পারছেন না। পাশাপাশি, রোগীদের পরিজনদের জন্য পানীয় জল সরবরাহের পরিকাঠামো, বিশ্রামাগার তৈরি ও প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়ার্ডের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও করা যাচ্ছে না। জবরদখল উচ্ছেদ আটকে থাকায় হাসপাতাল চত্বরে নয়া ভবন তৈরিও থমকে। হাসপাতালের সহকারী সুপার বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘রোগীকল্যাণ সমিতির সিদ্ধান্ত ছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সমস্যার সমাধান ও পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে পারেন না। তা ছাড়া রাজ্য সরকার হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য নিয়মিত সমিতিকে আর্থিক বরাদ্দ দেয়। হাসপাতালে সমিতি না থাকায় ১০ মাস ধরে সেই সরকারি বরাদ্দও আটকে রয়েছে।’’