নাবালিকা-ধর্ষণ ও মৃত্যুর প্রতিবাদে কোচবিহারে পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ বিজেপির। বৃহস্পতিবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
নাবালিকা ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও তার মৃত্যুতে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন চলছেই কোচবিহারে। বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপির মহিলা ও যুব মোর্চা। এ দিন দুপুরে দলের কোচবিহার জেলা পার্টি অফিস থেকে মিছিল করে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে পৌঁছয় তারা। আন্দোলনকারীদের আটকাতে পর-পর দু’টি ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশ। যদিও প্রথম বাঁশের ব্যারিকেড জোর করে ঠেলে সরিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। দ্বিতীয় ব্যারিকেডে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। সে সময় পুলিশের সঙ্গে সাময়িক ধস্তাধস্তি হয় বিজেপি কর্মীদের। পরে, সেখানেই বসে পড়ে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। একই দাবিতে এ দিন কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের খাপাইডাঙ্গাতেও প্রায় তিন ঘণ্টা পথ অবরোধ করে ছাত্রছাত্রীরা। তারা বলে, ‘‘যত দিন না ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসি হবে, তত দিন আন্দোলন চলতেই থাকবে।’’
বিজেপির আন্দোলনে এ দিন যোগ দিয়েছিলেন দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক সুকুমার রায়। তিনি বলেছেন, ‘‘পুলিশ অযথা আমাদের মিছিল আটকে দিয়েছে। আমরা দোষীদের ফাঁসির দাবি করছি। ওই দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে। পুলিশ এ ভাবে আমাদের আটকাতে পারবে না।’’ বিজেপির কোচবিহার জেলার সহ সভাপতি তথা মহিলা সংগঠনের নেত্রী দীপা চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে এক অরাজক পরিস্থিতি। সর্বত্র মহিলাদের উপরে অত্যাচার চলছে। কোচবিহারে নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, তারই প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন চলবে।’’
গত ১৮ জুলাই স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোচবিহারের নবম শ্রেণির ছাত্রী এক নাবালিকাকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে। এক দিন আটকে রেখে, তার উপরে যৌন নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ। পরে, অসুস্থ অবস্থায় কিশোরীকে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়ে অভিযুক্তেরা পালিয়ে যায়। ২০ জুলাই পরিবারের সদস্যেরা পুলিশে অভিযোগ জানান। ২৬ জুলাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় কিশোরীর। প্রধান অভিযুক্ত-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর থেকেই দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে দফায়-দফায় বিক্ষোভ চলছে জেলায়।
বিজেপির এই বিক্ষোভকে গুরুত্ব না দিয়ে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, ‘‘বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে মহিলাদের উপরে কী ভাবে নির্যাতন হচ্ছে, তা সবার জানা। মণিপুরের কী অবস্থা তা-ও সবাই জানে। সেখানে আমাদের রাজ্যে কোনও ঘটনা ঘটলে, পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়। কোনও অপরাধীর পার পাওয়ার রাস্তা নেই।’’