—নিজস্ব চিত্র।
ডুয়ার্সকন্যা গিয়েছিলেন চা-শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে। সঙ্গে ছিলেন কয়েক জন চা-শ্রমিক ও এক জন বিধায়ক। কিন্তু জেলাশাসকের দফতরেই ঢুকতে পারলেন না কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা! তাঁর নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দলকে ‘আটকাতে’ জেলাশাসকের দফতর ঘিরে রাখা হয়েছে ব্যারিকেড দিয়েছে। সামনেই রাখা জলকামান, অন্তত শতাধিক পুলিশকর্মী। পুলিশি নিরাপত্তার এই বহর দেখে বাধ্য হলে জেলাশাসকের দফতরের সামনে ডুয়ার্সকন্যার রাস্তাতেই বসে বিক্ষোভ দেখালেন বার্লারা। দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকা চা-বাগান খোলার দাবিতে তাঁরা স্লোগানও তুললেন।
বুধবার আলিপুরদুয়ারের বন্ধ চা-বাগানের সমস্যা নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বার্লা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামা-সহ ২০ জন চা-শ্রমিক। কিন্তু জেলাশাসকের দফতরে ঢোকার মুখেই তাঁরা বাধা পান। এর পর রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন তাঁরা। বার্লা বলেন, ‘‘জেলায় একের পর এক চা-বাগান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। উৎসবের মরসুমে শ্রমিকেরা বিপন্ন বোধ করছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জনপ্রিতিনিধি হিসাবে জেলাশাসকের সঙ্গে করতে গিয়েছিলাম তাঁর হস্তক্ষেপ চাইতে। কিন্তু এক জন জনপ্রতিনিধিকে আটকাতে এই রকম ব্যবস্থা করা হবে, এটা তো জানতাম না।’’ পুলিশ প্রশাসন শাসকদলের মতো আচরণ করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন বার্লা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আলোচনাই করতে এসেছিলাম। কোনও বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল না আমাদের।’’ আগামী দিনে প্রয়োজন পড়লে জেলা জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
জেলার বন্ধ বাগানগুলিতে প্রশাসন ত্রাণ দিচ্ছে না বলে অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন বার্লা। মঙ্গলবার কালচিনিতে বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের বৈঠকে যোগ দিয়ে তা নিয়ে সরবও হয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ করেছিলেন, বন্ধ চা-বাগানের শ্রমিকেরা খুব সমস্যায় রয়েছেন। অনেকে অনাহারেও দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু প্রশাসনের তরফে বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না।
জেলাশাসক আর বিমলা অবশ্য সেই অভিযোগ মানেননি। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ব্লক প্রশাসন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের চাল ও অন্য ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও শ্রম দফতর সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল চা-বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র ওরাঁও বলেন, ‘‘বন্ধ চা-বাগানগুলি দ্রুত খোলার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। এই বিষয়ে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা হয়েছে।’’ এর পরেই বুধবার জেলাশাসকের দফতরে চা-শ্রমিকদের নিয়ে যান বার্লা।