—প্রতীকী ছবি
‘বঙ্গধবনি যাত্রা’ স্থগিত করে দলে বিতর্কের মুখে পড়েছেন উদয়ন গুহ। অভিযোগ, তাঁর অনুগামীদের অনেকে প্রকাশ্যেই দল এবং দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেন। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার উদয়ন আবেদন করেন— “আমার বন্ধুরা কেউ দলের বা দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অনুগ্রহ করে কোনও পোস্ট করবেন না।” তিনি জানিয়ে দেন, বঙ্গধবনি যাত্রা স্থগিত করলেও দলের অন্য কর্মসূচি চলবে।
দলেরই একটি অংশের বক্তব্য, উদয়ন বেসুরো বলছেন। উদয়ন যদিও আগেই স্পষ্ট করেছেন, তিনি বেসুরো নন। তিনি বলেন, “যা লেখার তা ফেসবুকে লিখেছি। তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” তাঁর অনুগামী এক নেতা বলেন, “বিধায়ক যেখানে সংগঠন চাঙ্গা করতে উঠেপড়ে ময়দানে নেমেছেন। সেখানে কয়েক জন দলের ক্ষতি করছেন। দল কোনও ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। এমন চলতে থাকলে কী করে চলবে।”
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন ধরে দলের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ‘খুশি’ নন উদয়ন। বর্তমান জেলা রাজনীতিতে তিনি তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাঁর বিধানসভা এলাকা দিনহাটা। দলের অন্দরমহলের খবর, ওই এলাকায় মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কয়েক জন অনুগামী ‘উদয়ন বিরোধী’ বলে পরিচিত। অভিযোগ, তাঁরা বিধায়ক বিরোধী প্রচার শুরু করেছেন দিনহাটা বিধানসভা জুড়েই। সেই সঙ্গেই দিনহাটা বিধানসভায় দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বংশীবদন বর্মণ। দিন কয়েক আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহার সফরে এসেছিলেন। সেই সময় তাঁর মঞ্চে ছিলেন বংশীবদন। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সেই মঞ্চে তিনি বক্তব্যও রাখেন। দলের অন্দরের খবর, তা নিয়ে উদয়ন অনুগামীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
দলীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে বংশীবদনের সম্পর্ক বেশ ভাল। একাধিক অনুষ্ঠানে দু’জনকে একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থায় গত ২৫ ডিসেম্বর দিনহাটায় গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। উদয়ন অনুগামীদের অভিযোগ, সেখানে বিধায়ক-বিরোধী নেতাদের সঙ্গেই তাঁকে দেখা যায়। তার পরেই ফেসবুকে বঙ্গধবনি যাত্রা স্থগিত রাখার কথা জানান উদয়ন।
তৃণমূলের একটি অংশের অভিযোগ, দলে যে কারও ক্ষোভ থাকতেই পারে, কিন্তু কর্মসূচি বন্ধ রাখা ঠিক নয়। উদয়নের বিরোধী গোষ্ঠীর এক নেতার কথায়, “দলের মধ্যে বিরোধ থাকতেই পারে। তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কর্মসূচি বন্ধ রাখা কখনও ঠিক কাজ নয়।” উদয়ন অনুগামী এক নেতা অবশ্য বলেন, “যাঁরা দিনহাটায় বঙ্গধ্বনি যাত্রায় যাতে লোক না হয় সে জন্য দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ভয় দেখান, তাঁরাই কোচবিহারে গিয়ে দলের পতাকা নিয়ে মিছিল করেন। এটা চলতে পারে না।”