ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বিঁধলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। উদয়নের কটাক্ষ, ‘‘গরু পাহারার দায়িত্ব বিএসএফের, কয়লা পাহারার দায়িত্ব সিআইএসএফের। অথচ, গ্রেফতার হচ্ছেন তৃণমূল নেতারা।’’
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরে, শুক্রবার কোচবিহার শহরে একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দেন উদয়ন। তার মধ্যে দলীয় কর্মসূচিও ছিল। সেখানেই দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতারি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেন তিনি। উদয়ন অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘অনুব্রত কি ডাঙ্গোয়াল (গরুকে যারা সীমান্তের দিকে নিয়ে যায়)? তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হয়েছে? বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের অভিযোগ রয়েছে। ওই সীমান্ত পাহারার দায়িত্বে থাকে বিএসএফ। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন। সীমান্ত দিয়ে একটি গরু পাচার হলে স্বরাষ্ট্র দফতরের যাঁরা মাথা, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ নাম না করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে বিঁধে তিনি বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী যেখানে ডাকাতির মামলায় ৪২ দিন জেল খেটেছেন, সেখানে গরু পাচার হবে না তো কী হবে? তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’’ বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী পাল্টা বলেছেন, ‘‘উদয়ন গুহর বিরুদ্ধে বাম আমলে বীজ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল। এ বার কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, উদয়ন এক জন গুন্ডা। তাঁর কাছ থেকে চৌর্যবৃত্তি ছাড়া, কিছু আশা করা যায় না।’’ এ দিন চেষ্টা করেও ফোনে নিশীথের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মেসেজের।
কোচবিহারের প্রায় ৫৪৯ কিলোমিটার বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। যার একটি অংশে কাঁটাতার নেই। ওই অংশ দিয়ে গরু পাচারের অভিযোগ রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরে, তা নিয়ে হইচই হয় এই জেলাতেও। দলের নির্দেশ মেনে কোচবিহারেও ইডি-সিবিআইয়ের ‘পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগ তুলে পথে নেমেছে তৃণমূল। উদয়নেরও দাবি, বিরোধীদের কোণঠাসা করতে ইডি-সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি আবার এ-ও বলেছেন, ‘‘ইডি ও সিবিআই অফিসারেরা আর বেশি দিন পশ্চিমবঙ্গে নেই। আর দিন পনেরোর মধ্যে তাঁরা যাবেন বিহারে।’’ তাঁর এই ইঙ্গিতের কারণ, বিহারে সদ্যবিজেপির হাত ছেড়ে আরজেডি-কংগ্রেসকে নিয়ে সরকার গঠন করেছেন নীতীশ কুমার।