সাঁকো ভাঙায় ধৃত ২ তৃণমূল নেতা

সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, শুধু ওই দু’জন কেন? যাঁরা ওই সেতু চলাচলের বিষয়ে ‘নো অবজেকশন’ দিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা বারে বারে পরিদর্শন করলেও কেন আগাম কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:২১
Share:

প্রতীকী ছবি

লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ছট পুজোর জন্য তৈরি বাঁশের সাঁকো ভেঙে পড়ার ঘটনায় দুই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে তরুণ রায় এবং বাপ্পা সাহা নামে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তরুণ ১৮ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের নেতা। ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের প্রার্থীও হয়েছিলেন তিনি। বাপ্পা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত। তাঁরাই সাঁকো নির্মাণের বরাত নিয়েছিলেন বলে দাবি। অভিযোগ উঠেছে, ওই সাঁকো তৈরিতে বহু টাকার দুর্নীতি হয়েছে। বিজেপির দাবি, ওই টাকার একটি অংশ তৃণমূল নেতাদের পকেটে গিয়েছে।

Advertisement

সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, শুধু ওই দু’জন কেন? যাঁরা ওই সেতু চলাচলের বিষয়ে ‘নো অবজেকশন’ দিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা বারে বারে পরিদর্শন করলেও কেন আগাম কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর জানান, তিনি ঘাট পরিদর্শনে গিয়ে পরিদর্শনে সাঁকোর খারাপ অবস্থার কথা জানিয়ে তা বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও উদ্যোক্তারা শোনেননি। পরে দু’পাশে পুলিশ দিয়ে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তিনি বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।”

Advertisement

কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ অবশ্য বিষয়টিকে নিছকই দুর্ঘটনা বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “এক সঙ্গে বেশি মানুষ ওই সাঁকোতে উঠে যাওয়ায় এক দিকে তা খানিকটা বসে গিয়েছে। দ্রুত তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ ২ জনকে থানায় নিয়ে যায়। কেন তাঁদের গ্রেফতার করা হল, তা আমার জানা নেই।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি তথা মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ ছট পুজোর শুরুর সময়ে ওই ঘাটে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আমি চলে যাওয়ার পরে এমন ঘটনা ঘটেছে। আইন আইনের পথে চলবে।”

দীর্ঘ দিন ধরে তোর্সা নদীর ফাঁসিরঘাটে ছট পুজোর সময়ে কোচবিহার জলপথ সমবায় সমিতির মাধ্যমেই বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পুরসভা। ওই ঘাট জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে সমিতি লিজে নিয়েছে। ছট পুজোর পরে তা আরও কিছুটা মেরামত করে পুরো শীতের সময়ে যাত্রী পারাপার করে সমিতি। সে জন্য মানুষ-বাইক-সাইকেল প্রতি আলাদা আলাদা করে টাকা নেওয়া হয়। পুরপ্রধান জানান, সাঁকো তৈরির জন্য সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল।

অভিযোগ, প্রায় ২০০ মিটারের ওই সেতুতে কাঁচা বাঁশের জায়গায় অনেকটা জায়গায় পুরনো বাঁশ ব্যবহার করা হয়। পুরনো বাঁশ অনেকটা হালকা থাকে। এ ছাড়া একাধিক জায়গায় নারকেলের রশি ব্যবহার করা হয়। বেশি চাপ পড়লে যে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে সে আশঙ্কা করেছিলেন অনেকেই। সমিতির আমন্ত্রিত সদস্য তথা তৃণমূলের কোচবিহার ১ ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রসিদুল হক বলেন, “পুরসভা শেষ মুহূর্তে বরাত দিয়েছিল। তার পরেও মজবুত করে সাঁকো তৈরি করা হয়। কিন্তু অনেক মানুষ এক সঙ্গে উঠে যাওয়ায় সাঁকো বসে যায়। দ্রুত তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement