১৩ জানুয়ারি থেকে ঋতঙ্করের কোন হদিশ পাচ্ছিল না তাঁর পরিবার। —নিজস্ব চিত্র
পুরভোটের আগে অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। একটি অপহরণ কাণ্ডে পুলিশের জালে তৃণমূলের প্রভাবশালী দুই নেতা।
শিলিগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভারতনগরের বাসিন্দা ঋতঙ্কর সিংহ। এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা তপন দাসের ক্যাফেতে প্রায়ই যেতেন তিনি। সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ সময় কাটাতেন। ঋতঙ্করের কাছে সব সময়েই প্রচুর নগদ টাকা থাকত বলে জানা গিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁর উপর নজর রেখে অপহরণের ছক কষা হয়েছিল বলে মনে করছে পুলিশ।
১৩ জানুয়ারি থেকে বছর উনিশের ঋতঙ্করের কোন হদিশ পাচ্ছিল না তাঁর পরিবার। ঋতঙ্করের বাবা মানিককুমার সিংহ বলেন, “ছেলের কোনও খোঁজ না পেয়ে ১৪ জানুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। এর পরই ৪০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসতে থাকে।” পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, তপন দাসের ক্যাফে থেকেই মাদক খাইয়ে ঋতঙ্করকে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণের ফোনকে কেন্দ্র করেই পুলিশের হাতে আসতে থাকে নানা তথ্য। সেই তথ্য অনুসন্ধান করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনজেপি থানার পুলিশ একে বারে ফিল্মি কায়দায় দেশবন্ধু পাড়ার একটি ফ্ল্যাট থেকে তালা ভেঙে উদ্ধার করে ঋতঙ্করকে। আপাতত চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা তপন দাস। —নিজস্ব চিত্র
অপহৃত তরুণের বাবাও তৃণমূলকর্মী। তবে তিনি তপন দাস ও রতন ওরফে বাবু পালকে চেনেন না। তবে ক্যাফে থেকেই ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অনুমান করেছিলেন তিনি।
এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে এনজেপি থানার পুলিশ। তপন এবং রতন ছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন টোটোচালক রাজা সিংহ। তিন জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সুত্রের খবর, এলাকায় প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা রয়েছে তপনের। অন্য দিকে, অপহৃত যুবকের বাবারও প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা। ব্যবসায়িক শত্রুতা থেকেই অপহরণ কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
অন্য দিকে, এলাকার তৃণমূলপ্রার্থী তথা জেলা তৃণমূলের প্রবীন নেতা প্রতুল চক্রবর্তী স্বীকার করে নেন, ধৃত তপন দাস ও বাবু পাল তাঁদের দলেরই কর্মী। নির্বাচনী প্রচারে প্রতুলের সঙ্গে তাঁদের দেখাও গিয়েছে।