একদিনে জোড়া মিছিল

যানজটে রুদ্ধ শহর

ট্রাফিক পুলিশ হিলকার্ট রোডে যান চলাচলের চাপ কমানোর চেষ্টা করলে লাগোয়া রাস্তা, যেমন সেবক রোড, বিধানরোড ও সংলগ্ন রাস্তাগুলো, মহকুমা পরিষদের সামনের রাস্তা যানজটে জেরবার হয়ে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩৮
Share:

জট: মিছিলের জেরে গাড়ির লম্বা লাইন শিলিগুড়ির রাস্তায়। আটকে পড়েছে অ্যাম্বুল্যান্স। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

ক্রিসমাসের আগের দিন মিছিলে অবরুদ্ধ হল শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকা। মঙ্গলবার বিজেপির মিছিলকে কেন্দ্র করে বাঘাযতীন পার্ক থেকে প্রধাননগর পর্যন্ত শহরের ‘লাইফ লাইন’ হিলকার্ট রোড যানজটে স্তব্ধ হল। দুর্ভোগে পড়তে হল স্কুল পড়ুয়া, প্রবীণরা থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীদের। অন্য দিকে শহরে প্রবেশের মুখে ফুলবাড়ি-উত্তরকন্যা এলাকায় এশিয়ান হাইওয়ে-২ মিছিলে আটকে পড়ে এক ঘণ্টারও বেশি। বাসিন্দাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ শহর মিছিলনগরীতে পরিণত হওয়ায়।

Advertisement

ট্রাফিক পুলিশ হিলকার্ট রোডে যান চলাচলের চাপ কমানোর চেষ্টা করলে লাগোয়া রাস্তা, যেমন সেবক রোড, বিধানরোড ও সংলগ্ন রাস্তাগুলো, মহকুমা পরিষদের সামনের রাস্তা যানজটে জেরবার হয়ে পড়ে। মিছিলের পরে হিলকার্ট রোডেও যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। শিলিগুড়ি জংশন থেকে রাস্তায় আটকে পড়া বাসে আধঘণ্টা, পৌনে এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর অনেকেই নিরুপায় হয়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা হন। ঘণ্টাখানেক ধরে চলে মিছিল, পরে প্রধাননগর থানা মোড়ে হিলকার্ট রোড আটকে চলতে থাকে সভার কাজ। অচল হয়ে পড়ে শহর। যানজটে আটকে থাকা অ্যাম্বুল্যান্স বার করতে ট্রাফিকের হিমসিম অবস্থা। যদিও শিলিগুড়ির ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত ডিসি ডম্বর সিংহ সোনার বলেন, ‘‘আজ ট্রাফিক পুলিশ স্বাভাবিক কর্তব্য পালন করেছে। সে রকম কোনও বড় যানজট হয়নি।’’

এ দিন শিলিগুড়ি শহরে বা ফুলবাড়ি এলাকায় কোনও ক্ষেত্রেই মিছিলের কোনও অনুমতি দেয়নি পুলিশ। বিভিন্ন জেলায় অন্তর্দলীয় কোন্দল, বাসের সমস্যায় বেশি লোক আনা নিয়ে চিন্তায় ছিল বিজেপি। পরিস্থিতি সামাল দেয় আরএসএস। শেষ পর্যন্ত বিজেপির অন্তত ১৫ হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থকের মিছিল শহরকে অবরুদ্ধ করেছে বলে অভিযোগ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘কাশ্মীর নিয়ে গণভোটের কথা পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, কাশ্মীরের হুরিয়ত কনফারেন্সের মতো বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বলেন। সংসদে পাশ হওয়া আইনের বিরোধিতায় গণভোটের কথা বলে মমতা দেশদ্রোহীতা করছেন।’’ এ কথায় গুরুত্ব দেননি পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘বাইরে থেকে লোক এনে শহরে মিছিল করছে বিজেপি। মানুষ এনআরসি চাইছে না এটা পরিষ্কার।’’

Advertisement

শিলিগুড়ি যখন বিজেপি-র মিছিলে স্তব্ধ নস্যশেখ উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগে শহরের উপকন্ঠে ফুলবাড়িতে এনআরসি, সিএএ-র প্রতিবাদে অন্তত ৭ হাজার মানুষ তখন মিছিল করছেন। জাতীয় পতাকা হাতে, অম্বেডকরের ছবি নিয়ে। শামিল হন তৃণমূলের ফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ রায়, তৃণমূলের ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি ব্লক সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্য দেবাশিস প্রমাণিক-সহ তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরাও। আমাইদিঘি স্কুলের কাছ থেকে এশিয়ান হাইওয়ে ২ হয়ে মিছিল শুরু হতেই যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ফুলবাড়ি মোড় থেকে পুলিশ একমুখী রাস্তায় এক দিক দিয়ে মিছিল যাওয়ার ব্যবস্থা করে। অন্য দিকে তখন দাঁড় করিয়ে রাখা হয় গাড়িগুলো। মিছিলের পিছনে এক ঘণ্টারও বেশি আটকে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি যাতায়াতের বাস ছাড়া ডুয়ার্স থেকে আসা বিভিন্ন গাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাক। ফুলবাড়ি মোড় হয়ে, উত্তরকন্যার সামনে দিয়ে ঘুরে মিছিল ডিভাইডারের অন্য দিকে ঘুরে চূনাভাটির দিকে যায়। নস্যশেখ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি মহম্মদ শাহেনশা ফিরদৌস আলম বলেন, ‘‘যান চলাচলে কিছুটা সমস্যা হলেও কেন্দ্রের জন বিরোধী নীতির প্রতিবাদে মিছিলে সাড়া পড়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement