সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে উত্তরপূর্ব ভারত যে সুবিধা পায়, সেই সুবিধে উত্তরবঙ্গকেও দেওয়ার প্রসঙ্গে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সুরেই সুর মেলালেন জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। রবিবার দিল্লি রওনা দেওয়ার আগে জলপাইগুড়িতে বিজেপি পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন জয়ন্ত। সেখানে তাঁর মন্তব্য, “দাবি না তুললে কোনও দিন কোনও কিছু সম্ভব হবে না। উত্তরবঙ্গকে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া বা উত্তরপূর্ব ভারতের যে সুবিধাগুলি সেগুলি পাওয়ার ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গকে যদি জুড়ে দেওয়া যায় বা সুবিধাগুলি যদি উত্তরবঙ্গকে পাইয়ে দেওয়া যায় সে ক্ষেত্রে তাঁর (সুকান্ত মজুমদারের) প্রস্তাবকে আমি দুশো শতাংশ সমর্থন করি।” যদিও রাজ্যের একটি অংশকে অর্থনৈতিক ভাবে স্বতন্ত্র সুবিধে দিলে ভবিষ্যতে বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা করেছেন।
অন্য দিকে, এ দিন শিলিগুড়িতে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার মন্তব্য, “উত্তরপূর্বের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ জুড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে আমি কিছু খোলসা করব না। এ বিষয়ে অনেক রহস্য রয়েছে। এটা আপাতত পর্দার পিছনেই থাক। সময় হলে সংসদে বা সংবাদমাধ্যমে বলব।” উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবি নিয়েও এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে ‘ধন্দ’ রেখেছেন। তিনি বলেন, “অনেক পরিস্থিতিতে আলাদা রাজ্যের দাবি ওঠে। সব রাজ্যের কথা বলতে পারব না। কিছু ক্ষেত্রে উন্নয়ন বা স্বতন্ত্র পরিচিতির নিরিখে তা আবশ্যক। কিছু পুরনো দাবি সামনে আসে। সংবাদমাধ্যমে বললে তো আলাদা রাজ্য হবে না। সাংসদে সময় হলে অবশ্যই তুলে ধরব।’’ এর আগে একাধিকবাদ বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্ব বঙ্গ-ভাগের বিরোধী বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন। সে প্রসঙ্গ তোলায় রাজু বিস্তা বলেন, “নেতা জনতার, তাই নেতা জনতার লাইনেই থাকে থাকবে। আর ওটাই পার্টির লাইন।"
উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের স্বীকৃতির দাবিতে হওয়া আন্দোলনের প্রসঙ্গও এ দিন জলপাইগুড়ি সাংসদের মুখে শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, “কেন এখনও উত্তরবঙ্গের মানুষকে কার্ডিয়াক বা নিউরো সার্জারি করতে কলকাতা যেতে হবে, এত দিন পরে কেন এমন চলবে? কত দিন এ ভাবে উত্তরবঙ্গের মানুষকে বঞ্চিত থাকতে হবে? উত্তরবঙ্গ থেকে কামতাপুরী বা গোর্খাল্যান্ড বিভিন্ন নামে হয়তো আন্দোলন হয়েছে, সে সব তো বঞ্চনার কারণেই হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের নাগরিককে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখা হয়েছে কেন?”
এ দিনই কোচবিহারে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদার নতুন বাংলা-ভাগের জিগির তুলেছেন। বিজেপির একটি অংশ রাজ্যভাগের পক্ষে প্রকাশ্যে কথা বলছে। আর একটি অংশ বিপক্ষে কথা বলছে। বিজেপি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করুক।’’