দলীয় কার্যালয়ের সামনে বোর্ডে দেবশ্রীর ছবি ঢাকা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র
রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর সঙ্গে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা নেতৃত্বের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। বুধবার কৃষ্ণর অনুগামীরা রায়গঞ্জ শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় তাঁর দলীয় কার্যালয় থেকে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর ছবি দেওয়া একাধিক ফ্লেক্স খুলে ফেলে দিয়েছেন। কার্যালয়ের ভিতরে ও বাইরে একাধিক ফ্লেক্স ও বোর্ডে দেবশ্রীর ছবি ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এরই মাঝে মঙ্গলবার কৃষ্ণ দিল্লিতে গিয়েছেন।
ওই দিন দুপুরে কৃষ্ণর সঙ্গে দেখা করতে রায়গঞ্জে আসেন বিজেপির উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক শ্যামচাঁদ ঘোষ। কৃষ্ণকে তাঁর দলীয় কার্যালয় না পেয়ে তাঁকে ফোনও করেন শ্যামচাঁদ। কিন্তু কৃষ্ণ তাঁকে ‘বাইরে আছেন’ বলে জানিয়ে তাঁর সঙ্গে আপাতত দেখা করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। উল্লেখ্য, বিজেপিতে তিনি সম্মান পাচ্ছেন না ও তাঁর বিরুদ্ধে দলে ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করে গত রবিবার কৃষ্ণ বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার ও দেবশ্রীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে জেলায় দলের সবরকম কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা
করেন কৃষ্ণ।
এরপরেই কৃষ্ণ তৃণমূলে ফিরবেন কি না, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে প্রশ্ন ওঠে। অন্যদিকে, তিনি ‘বেসুরো’ হওয়ার পর তাঁকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্যের একাধিক নেতানেত্রী ফোন করে তাঁর অবস্থান জানতে চান। পাশাপাশি, তাঁরা তাঁকে তৃণমূলে না ফেরার অনুরোধ করেন। কিন্তু কৃষ্ণ তাঁদেরকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি। বিজেপির অন্দরের খবর, বিজেপিতে সম্মান, মর্যাদা ও ভাল জায়গা না পেলে কৃষ্ণর পক্ষে দলে থাকা সম্ভব নয় বলে তিনি ইতিমধ্যেই দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের জানিয়ে দিয়েছেন।
কৃষ্ণ বলেন, “দিল্লিতে কেন এসেছি, তা সময়ে বলব। আমার দলীয় কার্যালয়ে দেবশ্রীদেবীর ছবি নিয়ে কী হয়েছে, তা বলতে পারব না।” বিজেপির এক জেলা নেতার দাবি, দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে শ্যামচাঁদ ওই দিন বাসুদেব ও দেবশ্রীর সঙ্গে কৃষ্ণর বিরোধ মেটানোর জন্য কৃষ্ণর সঙ্গে বৈঠক করতে রায়গঞ্জে এসেছিলেন।
কৃষ্ণ বলেন, “দলের অন্দরে বাসুদেববাবু ও দেবশ্রীদেবীর অন্যায়, স্বেচ্ছাচারিতা ও ‘তুঘলকি’ আচরণের প্রতিবাদ করেছি। ওঁদের সঙ্গে আমার সমঝোতার প্রশ্নই নেই। আমি তৃণমূলে যোগ দিলে সবাই জানতে পারবেন।” বাসুদেব কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বিজেপির এক জেলা নেতা বলেছেন, “বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্ব দেখছেন।”