জলমগ্ন: হাসপাতালের চারদিকে জমেছে জল। ছবি: অমিত মোহান্ত
এক রাতের মধ্যে চার দিকে বন্যার জল ঢুকে ডুবে গেল পুরো হাসপাতাল। চিকিৎসকদের আবাসনও থইথই করছে টাঙন নদের জলে। ভোর হওয়ার আগেই বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের রসিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে জলবন্দি হয়ে পড়া ২০ জন রোগীকে একতলা থেকে দোতালায় সেমিনার রুমে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের এই তৎপরতায় খুশি রোগীদের পরিবারের লোকজন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকও খুশি। এ দিন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত শিবপুর এলাকার এক বাসিন্দা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। তাঁর আত্মীয় মহেশ বর্মনের কথায়, ‘‘বন্যার জল ঢুকলেও এক মুহূর্তের জন্য চিকিৎসক ও নার্সেরা পরিষেবা বন্ধ রাখেননি।’’
ওই হাসপাতেলের বিএমওএইচ প্লাবন মণ্ডলের কথায়, ‘‘হু হু করে জল ঢুকছিল। একতলাতে মহিলা ও পুরুষ বিভাগে পুরো জলে ডুবে যায়। দোতালায় মিটিং হলঘরটিকে ঘিরে তখন অস্থায়ীভাবে দু’টি ওয়ার্ড তৈরি করে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে।’’ গত রবিবার থেকে বুনিয়াদপুরে প্লাবন দেখা দিলেও ওই গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ সহ ঋষিকেশ মিত্র, প্রিয়ঞ্জিত দাস, ডক্টর আলি সহ পাঁচ চিকিৎসক এবং ৮ জন নার্সের কেউই ছুটি নিয়ে বাড়ি যাননি। তাঁরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন বলে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল ভবনের দোতলার বারান্দায় ত্রিপল টাঙিয়ে অস্থায়ী ওয়ার্ডও তৈরি করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। রোগী বাড়লে সেখানে রেখে চিকিৎসা করা হবে।’’
বংশীহারি ব্লকের বুনিয়াদপুরের রসিদপুরে ২৫ শয্যার এই গ্রামীণ হাসপাতালে এ দিন কয়েক জন ডায়েরিয়ার রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। চার জন প্রসূতি এবং সাপের ছোবলে অসুস্থ আরও দু’জনকে নিয়ে মোট ১৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ দিন সকলে হাসপাতাল বানভাসি হয়ে পড়লে ওই ১৫ জন রোগীকে দোতালায় স্থানান্তরের কাজে হাত লাগান স্বাস্থ্যকর্মীরা। বিএমওএইচ প্লাবনবাবু বলেন, ‘‘আমাদের থাকার জায়গাতেও জল ঢুকেছে। তার মধ্যেই সহকর্মীরা একজোট হয়ে এগিয়ে এলেন বলেই দুর্যোগেও আমরা পরিষেবা চালু রাখতে পেরেছি।’