নদীর উপরে: ঘিস নদীর উপরে লাইনচ্যুত হয়ে যায় ভোরের শিলিগুড়ি-দিনহাটা আপ ডেমু ট্রেনের একটি কামরা। নিজস্ব চিত্র
নির্মীয়মাণ রেলপথের কালভার্টে লাইনচ্যুত হল একটি বগির চারটি চাকা। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা নাগাদ শিলিগুড়ি দিনহাটা আপ ডেমু ট্রেন বাগরাকোট এবং ওদলাবাড়ি রেল স্টেশনের মাঝে লাইনচ্যুত হয়। ইঞ্জিনের পরের চার নম্বর বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। ৪১ নম্বর পিলার পোস্টের কাছে ঘিস নদীর সেতুতে ওঠার আগে ঘিস নদীর চর এলাকাতে কিছু দিন ধরেই কালভার্ট তৈরির কাজ চলছিল। সেখানেই দুর্ঘটনা হয়। জোরে আওয়াজ করে, দাঁড়িয়ে পরে ট্রেন।
আতঙ্ক গ্রাস করে যাত্রীদের। যে বগিটি লাইনচ্যুত হয় সেই বগির যাত্রীদের মধ্যে তিন চার জন আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে বেরোতে গিয়ে ১২ ফুট নীচের ঘিসের বালুচরায় লাফ দিয়ে সামান্য চোটও পান, তবে কাউকেই হাসপাতালে আনার মতো অবশ্য অবস্থা তৈরি হয়নি। কিন্তু কেউ জখম না হলেও ট্রেনটি বড়সড় বিপদ থেকেই বেঁচে গিয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। যেহেতু ঘিস নদী খাতে রেলপথ অনেকটাই উঁচুতে তাই ট্রেনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়ে গড়িয়ে পরার সম্ভাবনাও প্রবল ছিল বলেই রেলের বাস্তুকারদের একাংশের মত। ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরেই ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক থাকায় যাত্রীরা সড়কে এসে সেখান থেকে বাস বা ছোট গাড়িতে করে এলাকা ছাড়েন। দুপুরেই আলিপুরদুয়ার থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান ডিআরএম চন্দ্রবীর রমণ সহ অন্যান্য রেল আধিকারিক, বাস্তুকারেরা। তাদের নির্দেশেই লাইনচ্যুত কামরাটি ছেড়ে সামনে ও পেছনের ইঞ্জিনের মাধ্যমে ডেমু ট্রেনটিকে বেলা আড়াইটা নাগাদ সরিয়ে নেওয়া হয়। বিকালের মধ্যেই লাইন খুলে দেওয়া হবে বলেও রেল জানিয়ে দেয়।
বর্ষাকালে ঘিসের একটা বড় অংশের জল এই চর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়। রেলপথের ক্ষতি এড়াতেই তাই শীতকালের শুখা সময়ে জল বের করার জন্যে নতুন কালভার্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রেল। কিছু দিন ধরেই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রেখেই এই নির্মাণ কাজ চলছিল। এই রুটের সমস্ত ট্রেন চালকদের নির্মীয়মাণ এলাকাতে গতি কমিয়ে চলাচলের নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু সতর্কতার পরেও কেন এমন হল, তা নিয়ে রেলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে।