বুধবার দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে দেহের ময়না তদন্ত করা হয়েছে। —প্রতীকী চিত্র।
দার্জিলিং থেকে সান্দাকফু ঘুরতে গিয়ে মারা গেলেন এক পর্যটক। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁকে দার্জিলিঙের সুখিয়াপোখরি প্রাথমিক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ ও প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মৃতের নাম আশিস ভট্টাচার্য (৬৫)। তিনি কলকাতার ভবানীপুর এলাকার বাসিন্দা। গত দুই বছরে পাহাড়ের উচ্চতায় এ নিয়ে তিন জন পর্যটকের মৃত্যু হল।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, উচ্চতার জেরে রক্তচাপ এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ওই পর্যটক মারা গিয়েছেন। বুধবার দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে দেহের ময়না তদন্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দেহ কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। দার্জিলিং সদরের মহকুমাশাসক রিচার্ড লেপচা বলেছেন, ‘‘পর্যটকের মৃত্যুর খবরের পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, গোর্খল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) সঙ্গে আলোচনা করে সান্দাকফু, মানেভঞ্জন ঘোরার ক্ষেত্রে সতর্কতা হিসাবে কিছু স্বাস্থ্যবিধি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। জারি করা হবে নতুন নির্দেশিকাও। তবে পর্যটন সংগঠনগুলির দাবি, সান্দাকফু অঞ্চলে একটি হাসপাতাল, ‘এয়ার লিফ্টের’ প্রয়োজনী বন্দোবস্ত এবং বিমার ব্যবস্থা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের’ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘অ্যাডভেঞ্চার পর্যটনের ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা প্রয়োজন। অনেক দিন ধরে কথা হলেও সান্দাকফু অঞ্চলে তা দ্রুত চালু করা জরুরি।’
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ১৯ নভেম্বর দার্জিলিং থেকে সপরিবার সান্দাকফু রওনা হয়েছিলেন ওই পর্যটক। রাতে তাঁরা ধোতরে এলাকায় ছিলেন। সেখানেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। শ্বাসকষ্টের জেরে কাবু হতে থাকলে তাঁকে সুখিয়াপোখরি প্রাথমিক হাসপাতালে নামিয়ে আনা হয়। সেখানে তাঁকে মৃত বলে জানানো হয়। এর আগে ২০২২ সালে ইজরায়েলের এক পর্যটকও মানেভঞ্জন থেকে সান্দাকফু ট্রেকিং করে রাতে তাঁবুতে ঘুমের মধ্যেই মারা যান। চলতি বছরের উত্তর দিনাজপুরের এক যুবকও সান্দাকফুতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন।
সান্দাকফুর জন্য মানেভঞ্জন থেকে ট্রেকিং শুরু হয়। গাড়িতেও সান্দাকফু যাওয়া যায়। প্রায় ১২ হাজার ফুট উচ্চতার এলাকাটি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের একাংশের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু চিকিৎসা এবং পরিকাঠামোগত সমস্যা বরাবর রয়েছে বলে অভিযোগ। চিকিৎসকেরা মনে করেন, পাহাড়ের এমন উচ্চতায় উঠে হঠাৎ অনেকের শারীরিক সমস্যা হয়। আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে এগিয়ে যাওয়াই ভাল। তবে অসুস্থতা
কিছু থাকলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যা বাড়ে।