Lockdown

লকডাউনে চাকরি গিয়েছে, টোটোর উপর মিনি রেস্তরাঁ বানিয়ে লড়াই কর্ণজোড়ার মৃদুলের

করোনা অতিমারিতে গৃহবন্দি অনেকেই নিয়ম করে পৌঁছে যান মৃদুলের মিনি রেস্তরাঁয়। চার রাস্তার ধারে ফাঁকা জায়গায় রসনাতৃপ্তির জন্য।।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ১৭:০২
Share:

রেস্তরাঁয় ব্যস্ত মৃদুল। নিজস্ব চিত্র

টোটো-রেস্তরাঁর ভাঁড়ারে আছে সব। চিকেন পকোড়া থেকে গ্রিল করা মাংস, কাবাব থেকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই— রসনাতৃপ্তির যাবতীয় আয়োজন। কর্ণজোড়া স্পোর্টস কমপ্লেক্স লাগোয়া সরকারি পার্কের পাশে বিকেল হলেই সুসজ্জিত টোটোয় মিনি রেস্তরাঁ নিয়ে হাজির হন মৃদুল রায়। কী নেই সেই টোটো-রেস্তরাঁয়— ব্যাটারিচালিত ফ্রিজ, গ্যাস আভেনের তন্দুর, গ্রিল, ডিপ ফ্রাইং আভেন, সব। কন্টিনেন্টাল থেকে দেশীয়, বিভিন্ন আধুনিক খাবার মেলে সেখানে।

Advertisement

করোনা অতিমারিতে গৃহবন্দি অনেকেই নিয়ম করে, নিয়ম মেনে পৌঁছে যান মৃদুলের এই মিনি রেস্তরাঁয়। খোলা আকাশের নীচে চার রাস্তার ধারে ফাঁকা জায়গায় রসনাতৃপ্তির সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানো। আড্ডাপ্রিয় বাঙালির জন্য এক আদর্শ বিকেলের আয়োজন করে দেন মৃদুল। তবে তিনি ভোলেননি করোনা সতর্কতার কথাও। তাঁর দোকানের সামনে সবসময় ঝোলানো থাকে, ‘মাস্ক পরুন, সতর্ক থাকুন’।

এ তো গেল মৃদুলের টোটো-রেস্তরাঁর কথা। জীবনযুদ্ধে মৃদুলের একটা অন্য লড়াইও আছে। হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করে বেঙ্গালুরুর একটি নাম করা রেস্তরাঁয় কাজ করতেন মৃদুল। গত বছর লকডাউনে সেই রেস্তরাঁ বন্ধ হয়ে গেলে মালদহের গাজোলে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। অনেক কষ্টে। কর্মহীনতার হতাশা তাঁকে গ্রাস করেছিল। কিন্তু দমাতে পারেনি। শুরু হয় উঠে দাঁড়ানোর নতুন পরিকল্পনা। রায়গঞ্জে কর্ণজোড়া লাগোয়া বোগ্রামে দিদির বাড়ির পাশে ছোট টিনের ঘরে সংসার বাঁধেন মৃদুল ও তাঁর স্ত্রী রাখি দেবসিংহ। দু’জনের ভাবনায় আসে এই মিনি রেস্তরাঁ। বাস্তব রূপ পায় স্বপ্ন। তার পর থেকে গত প্রায় পাঁচ মাস ধরে এ ভাবেই সারাদিন ধরে সামগ্রী প্রস্তুত করে বিকেলে টোটোয় তৈরি রেস্তরাঁ নিয়ে মৃদুল চলে যান কর্ণজোড়া পার্কের পাশে। তাঁর কথায়, ‘‘কাজ হারিয়ে প্রথমে হতাশ হয়েছিলাম ঠিকই, তবে স্ত্রীর সহযোগিতায় এ ভাবে টোটো সাজিয়ে নিজের পছন্দের কাজের ব্যবসা শুরু করি। খদ্দেরদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পেয়েছি।’’

Advertisement

স্বামীর এই জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে শামিল রাখিও। যদিও রেস্তরাঁ সাজিয়ে তৈরি করা, রান্নার সামগ্রী তৈরি করার কাজে মৃদুলকে সাহায্য করেন রাখি। রেস্তরাঁ চালান একা মৃদুলই৷ ক্রেতারাও খুশি টোটো-রেস্তরাঁ নিয়ে। এক ক্রেতার কথায়, ‘‘এত দিন তো রেস্তরাঁগুলো বন্ধ ছিল। পরে সেগুলো খুললেও সংক্রমণের ভয় থেকেই যাচ্ছিল। কিন্তু এখানে খাবার নিয়ে খোলামেলা জায়গায় দাঁড়িয়ে খাওয়া যায়। কোনও ভয় থাকে না। ওঁর হাতে বানানো অত্যাধুনিক সব রেসিপি আমাদের বেশ ভালই লাগে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement