ভাঙনে: বাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছে দুই খুদেও। ডান দিকে, পাড় ভাঙছে তোর্সা। কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
কারও বাড়িতে জল ঢুকে পড়েছে। কারও ভিটেমাটি চলে গিয়েছে নদীগর্ভে। কোনওরকমে ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে দুর্গতরা আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের উপর। সোমবার রাত থেকে তোর্সা নদীর জল বাড়ছিল কোচবিহারে। সেই সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। রাতেই অনেকেই বাঁধের উপরে আশ্রয় নেন।
দুর্গতদের অনেকেই জানান, আচমকা অল্প সময়ের মধ্যেই জল হু হু করে বেড়ে যায়। প্রথমটায় তাঁরা এতটা ভাবতে পারেননি। পরে পরিস্থিতি খারাপ দেখে বাঁধের উপরে আশ্রয় নিতে শুরু করেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই এলাকা পরিদর্শনে যান কোচবিহারের মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল ও কোচবিহার পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য আমিনা আহমেদ।
মহকুমাশাসক জানান, বাসিন্দাদের থাকার জন্য স্থানীয় একটি স্কুলে ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও এই মুহূর্তে কেউ সেখানে যেতে চাইছেন না। তিনি বলেন, “অস্থায়ী ভাবে সবাই বাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানেও যাতে কারও অসুবিধে না হয় সেদিকে লক্ষ রাখা হচ্ছে।” আমিনা আহমেদ জানান, বাঁধের উপরে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলিকে ত্রিপল ও শুকনো খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “কারও যাতে কোনও অসুবিধে না হয় সেদিকে নজর রাখা হয়েছে।”
পুরসভার ওই এলাকার একটি অংশের বাসিন্দারা বাঁধের নিচে তোর্সা নদীর চরেই ঘর করে বসবাস করেন। ফি বছর বর্ষার সময়ে তাঁদের আতঙ্কে ভুগতে হয়। এর আগেও বহু ঘর একই ভাবে নদীতে চলে গিয়েছে। পরে ওই বাসিন্দারা অন্যত্র বাড়ি করেছেন।
এবারেও বৃষ্টির প্রকোপ অনেকটাই বেশি। দিনকয়েক আগেও টানা বৃষ্টি হয়েছে। তখনও নদীর জলে একাধিক অসংরক্ষিত এলাকা ডুবে যায়। তাতে বহু মানুষকে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছিল।
আমন ধানের বীজতলাও নষ্ট হয়েছে একাধিক জায়গায়। ফের ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয় উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রে। সেই সঙ্গে কৃষকদেরও সতর্ক করা হয়। এই অবস্থার মধ্যেই সোমবার রাত থেকে তোর্সার জল বাড়তে থাকে। যদিও প্রশাসন জানিয়েছে, জল নামতে শুরু করেছে। নতুন করে জল বাড়ার কোনও সতর্কতাও নেই।