কোচবিহার পুলিশের স্পোর্টসে গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ, পার্থপ্রতিম রায়, উদয়ন গুহ ও অভিজিৎ দে ভৌমিক। ছবি: সমাজমাধ্যম থেকে সংগৃহীত
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার প্রথম সারির নেতাদের কারও হাতে এয়ার গান, কারও হাতে ধনুক। কোচবিহার পুলিশের স্পোর্টসে এ ভাবেই ছবি তুললেন তাঁরা। আর সেই সব ছবি (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ছড়িয়ে পড়ল সমাজ মাধ্যমে। তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। বিরোধীদের বক্তব্য, দলে কে কতটা পারদর্শী খেলোয়াড়, তা বোঝাতেই ওই ছবি। তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, আমন্ত্রিত সদস্যদের নিয়ে সেখানে একটি খেলা ছিল। তাতেই যোগ দিয়েছিলেন সকলে। তা নিয়ে রাজনীতির কোনও বিষয় নেই।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘বিরোধীদের এ সব কটাক্ষের কোনও উত্তর হয় না। সেখানে প্রত্যেকেই খেলার মাঠে ছিলাম। খেলায় যোগ দিয়েছি। বিরোধীরা কিছু বলার মতো পাচ্ছেন না, তাই এ সব নিয়ে বলছেন।’’
ওই মাঠে উদয়ন ছাড়াও, ছিলেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, দলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ, প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। প্রত্যেককেই এয়ার গান ও ধনুক হাতে ‘লক্ষ্যভেদ’ করতে দেখা যায়। প্রত্যেকেই সমাজ মাধ্যমে ওই ছবি (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) দিয়েছেন। উদয়ন ও গিরীন্দ্রনাথ সমাজ মাধ্যমে তা পোস্ট করে ‘লক্ষ্যভেদ’ শব্দটিও লিখেছেন।
এ দিকে, তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, এক সময়ে তৃণমূলে ‘দ্বন্দ্ব’ তীব্র আকার নিয়েছিল। জেলার শীর্ষ নেতারা তখন একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই মন্তব্য করেছিলেন। এই অবস্থার মধ্যেইকয়েক দফায় দলের জেলা সভাপতি বদল করে তৃণমূল। বর্তমানে দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। অভিজিৎ দায়িত্ব নেওয়ার পরে, দলের ‘দ্বন্দ্বে’ কিছুটা রাশ টানারচেষ্টা করেন। তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবাইকেই সমান গুরুত্ব দেওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টায়। কিন্তু ভিতরে ভিতরে ‘প্রতিযোগিতা’ চলছে বলেই তৃণমূল সূত্রের দাবি। আর তৃণমূলের ওই ‘দ্বন্দ্বকেই’ হাতিয়ার করেছে বিজেপি। দলেরকোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘তৃণমূলের অন্দরে আসলে প্রতিযোগিতা চলছে, কে কত বড় মাপের নেতা, তা দেখানোর জন্য। সে জন্যই এমন ছবি বাইরে আনতে হচ্ছে তাঁদের। কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারছেন না, মানুষ আর তাঁদের পছন্দ করছে না।’’
প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম বলেন, ‘‘বিজেপি আগে নিজেদের কথা ভাবুক। তাঁদের নেতারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে ছবি তুলছেন, সে সব নিয়ে তাঁরা আগে বলুন। পরে, অন্য কিছু ভাববেন।’’