সাংবাদিক বৈঠকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
সংবিধানের প্রতিলিপি নিয়েই গ্রামে গ্রামে ঘুরবেন তৃণমূল নেতারা। তুলে দেবেন, বাসিন্দাদের হাতেও। দলীয় সূত্রে খবর, সংগঠন চাঙ্গা করতেই এ বার তৃণমূলের হাতিয়ার ‘ভারতীয় সংবিধান’। রবিবার কোচবিহার শহরে নিজের বাড়ির অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “দেশের সংবিধান সম্পর্কে মানুষের জানা দরকার। আর বিজেপি কী করছে তা আজ সবাই জেনে গিয়েছেন। সংবিধান রক্ষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের কথা আমরা বলব।” ওই প্রচারে গ্রামে গ্রামে যাওয়ার কথা জানান কোচবহারের প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ও।
গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারের আসন তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। তার পরে গোটা জেলায় রাজ্যের শাসক দলের সংগঠন কার্যত ভেঙে পড়েছিল। বিধায়ক-মন্ত্রীরা বাড়ি থেকে বের হলেই বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে নেমে ওই অবস্থার অনেকটাই পরিবর্তন হয়। নতুন করে কর্মীদের সংগঠিত করে রাজ্যের শাসক দল। এ বারে ‘মমতা বাংলার গর্ব’ কর্মসূচিতে নেমে টানা ৭৫ দিন প্রচার করে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার টার্গেট নিয়েছে তৃণমূল। দল মনে করছে, অসমে এনআরসি’তে ১৯ লক্ষের উপরে মানুষের নাম বাদ পড়ায় কোচবিহারে ক্ষোভ বেড়েছে মানুষের মধ্যে। এই অবস্থায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়েও প্রচারে নেমেছে তৃণমূল। তাঁদের দাবি, ওই আইনেও মানুষকে বিদেশি তকমা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সে জন্য বাসিন্দাদের কাছে তাঁদের আবেদন, কোনওরকম সমীক্ষা বা সিএএ’র কাগজে কেউ স্বাক্ষর বা আবেদন না করেন।
রবীন্দ্রনাথ বলেন, “ভারতের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ। সেই জায়গাটাকে নষ্ট করে দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছে। একটা বিভেদ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। এটা কোনওভাবেই কেউ মেনে নেবেন না।” এদিন তিনি স্পষ্টভাবে জানান, এ বারের কর্মসূচিতে কোথাও বাধা দেওয়ার চেষ্টা হলে পাল্টা জবাব দেবেন তাঁরাও।
যদিও এর সরাসরি বিরোধিতা করেছেন বিজেপি’র কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা। তিনি বলেন, “কোনও প্রচারই আর তৃণমূলের কাজে লাগবে না। মানুষ পুরোপুরি রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। তাঁরা তৃণমূলের কথা আর বিশ্বাস করেন না।”