উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ (বাঁ দিকে) এবং শনিবার রাত থেকেই চলছে রান্নার কাজ। নিজস্ব চিত্র।
ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রেম কুমার বর্মনের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানের শাস্তির দাবিতে রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি করতে চলেছে তৃণমূল। ঘেরাও কর্মসূচির আগে জোরদার প্রস্তুতি চলছে কোচবিহারের ভেটাগুড়ি বাজারে। আন্দোলনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তৃণমূলের পক্ষ থেকে ভেটাগুড়ি বাজারে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী মঞ্চ। এছাড়া কর্মীদের বসার জন্য তৈরি করা হয়ছে ছাউনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে মঞ্চ তৈরি করা হয়ছে তা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে। অন্যদিকে, এই কর্মসূচির আগে নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ির সামনে আঁটো সাঁটো করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরাও করা হয়েছে মন্ত্রীর বাড়ির রাস্তার গলি এবং সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
তৃণমূলের দাবি, প্রায় পঁচিশ হাজার সমর্থক নিয়ে তাদের এই ঘেরাও কর্মসূচি চলবে। শনিবার রাত থেকেই জোর কদমে চলছে কর্মীদের খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত। ত়ৃণমূল সূত্রে খবর, খাবারের তালিকায় রয়েছে খিচুড়ি এবং সবজি।
যদিও ত়ৃণমূলের এই অবস্থান কর্মসূচি গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির কটাক্ষ, কোনওভাবেই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি ঘেরাও করতে পারবে না তৃণমূল। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই চাপের মধ্যে জেলা পুলিশ প্রশাসন।
কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কর্মী সমর্থকদের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল সকাল হতে না হতেই তারা যেন দলে দলে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। সেই মোতায়েক আমরা ২৫ হাজার কর্মী নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি করব। আগামীকাল পুরো কোচবিহার জেলা নেতৃত্ব এই ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে। সকাল দশটা থেকে আমাদের এই ঘেরাও কর্মসূচি শুরু হবে, চলবে সন্ধ্যে ছ’টা পর্যন্ত।”
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ অবশ্য বোস বলেন, “আগামীকালের তৃণমূলের এই কর্মসূচি পুরোপুরি ফ্লপ হবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক বুদ্ধি খুবই সীমিত। তিনি কলকাতা থেকে ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি ঘেরাও করতে হবে, এদিকে এই আন্দোলন সংগঠিত করতে জেলা তৃণমূলের লেজে গোবরে অবস্থা। প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি কর্মীদের ওপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও করলে তাদের প্রত্যেকটি নেতার বাড়িও ঘেরাও করা হতো, তাই তারা এই বাড়ি ঘেরাও আন্দোলন থেকে সরে এসে রাস্তায় মঞ্চ করে অবস্থান বিক্ষোভে নেমেছে।”
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বর মাসে কোচবিহারের দিনহাটায় বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হয় চব্বিশ বছরের যুবক প্রেমকুমার বর্মণের। নিহত যুবকের পরিবারের দাবি ছিল, তিনি ভিন রাজ্যে কাজ করতেন। ছুটিতে বাড়ি এসে সেদিন তিনি চাষের কাজকর্ম দেখতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেখানেই বিএসএফ তাঁকে গুলি করে খুন করেছিল।