চিলা রায়ের ৫১৩-তম জন্মদিবসের মঞ্চে গ্রেটার নেতা অনন্ত মহারাজ। রবিবার কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র
দুই শিবিরের সঙ্গেই ‘তাল মিলিয়ে’ চলছিলেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অনন্ত রায় (মহারাজ)। তাল ‘কাটল’ এ বার। অনন্তের ডাকে সাড়া দিলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, অনন্ত রায়কে গুরুত্বহীন বলেও দাবি করল শাসক দল।
শনিবার থেকে কোচবিহারের নিউ বানেশ্বরে চিলা রায়ের ৫১৩-তম জন্মদিবসে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন অনন্ত। দু’দিনের ওই অনুষ্ঠানে রবিবার ছিল প্রকাশ্য সভা। গত বার ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের অনেক নেতাও গিয়েছিলেন সেখানে। এ বার কেউ-ই যাননি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘রাজ্যভাগের দাবিদার কোনও সংগঠনের নেতার সঙ্গে এক মঞ্চে থাকা যাবে না। আমার মনে হয় মুখ্যমন্ত্রীও এমন অনুষ্ঠানে আর যোগ দেবেন না। যদিও সেটি তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। তিনি এই অনুষ্ঠানে না আসার মানেই আমাদের বার্তা দেওয়া।’’ প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘অনন্ত মহারাজের আর গুরুত্ব নেই। রাজ্য হয়ে গেল, হয়ে গেল বলে তিনি যে দাবি বার বার করেন, তার যে গুরুত্ব নেই সেটা মানুষ বুঝতে পেরেছে।’’
তৃণমূলের কেউ না থাকলেও বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা অবশ্য ওই সভায় যোগ দেন। শনিবারই সেখানে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। রবিবার বিজেপির কালিম্পংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাংলা থেকে আলাদা হতে চাই। সে ক্ষেত্রে আলাদা রাজ্য হবে না কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে, তা ঠিক হোক। বাকি বিষয় পরে দেখা হবে।’’ গ্রেটার নেতা অনন্ত মহারাজও তাঁর পুরনো অবস্থানের কথাই তুলে ধরেছেন। তাঁর দাবি, এই অঞ্চল আলাদা রাজ্য আগে থেকেই ছিল। নতুন করে রাজ্যের বিষয় নেই। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে যা বলার আগেই বলেছি।আর আমরা এই অনুষ্ঠানে সবাইকে আমন্ত্রণ জানাই। এ বারও জানিয়েছি। রাজ্যের মন্ত্রীরা কেন আসেননি সেটা তাঁদের বিষয়।’’
পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে বিজেপি ও অনন্ত রায় ‘খেলা খেলছেন’ বলে তোপ দেগেছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এর আগে একাধিক বার আলাদা রাজ্যের কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন। পার্থ বলেন, ‘‘বিজেপি যে মানুষকে নিয়ে খেলতে চাইছে, তা পরিষ্কার। আলাদা রাজ্যের দাবি তাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতা উড়িয়ে দিচ্ছেন। আবার স্থানীয় বিধায়ক সেই দাবি করছেন। বিজেপির এই রাজনীতি আর সফল হবে না।’’