তদন্তকারীদের নজরে কি এ বার অয়ন-পুত্র অভিষেকও? অভিষেকের পেট্রল পাম্প কেনার নথি (ছবিতে বাম দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এ বার জড়িয়ে গেল ইডির হাতে ধৃত প্রোমোটার অয়ন শীলের পুত্র অভিষেক শীলের নামও। ইডি তাদের হলফনামায় জানিয়েছিল, ইমন গঙ্গোপাধ্যায় এবং অভিষেক শীল যৌথ মালিকানায় একটি পেট্রল পাম্প কিনেছিলেন। হুগলি জেলার গুড়াপে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে সেই পেট্রল পাম্প কেনার যাবতীয় নথি আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে এসেছে।
সরকারি সিলমোহর থাকা ওই নথি বলছে, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ১ কোটি টাকায় পেট্রল পাম্পটি কেনা হয়েছিল। গুড়াপে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে প্রায় সাড়ে ৩ বিঘা জমির উপর এই পেট্রল পাম্প অভিষেক এবং ইমন কিনেছিলেন কলকাতার বিডন স্ট্রিটের বাসিন্দা নন্দগোপাল শুক্ল, অজয় শুক্ল এবং আশিস শুক্লর কাছ থেকে। স্থানীয়দের কাছে পাম্পটি ‘শুক্ল পাম্প’ নামেই পরিচিত। শুধু তা-ই নয়, কলকাতায় বন্ডেল রোডের উপরে অভিষেক এবং ইমন যৌথ মালিকানায় একটি ফার্ম খুলেছিলেন। তার নাম দিয়েছিলেন ‘ফসিল্স’। কিন্তু কে এই ইমন, যাঁর সঙ্গে যৌথ মালিকানায় একাধিক সম্পত্তি কেনেন অয়ন-পুত্র? অয়নের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, ইমন অভিষেকের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। আইন পড়ার সময়ে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে এই সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছিল বলে মত ওই সূত্রটির। অভিষেক এখন দিল্লিতে থাকেন বলে জানা গিয়েছ। যদিও ইমন থাকেন হুগলির উত্তরপাড়ার একটি আবাসনে। সরকারি নথি অনুযায়ী, চুঁচুড়ার বাসিন্দা অভিষেক।
অভিষেকের বাবা এবং নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ প্রোমোটার অয়নের বাড়িতে চাকরির পরীক্ষার উত্তরপত্র পেয়েছে ইডি। তার মধ্যে ২০১২, ২০১৪-র প্রাথমিক টেটের উত্তরপত্রের প্রতিলিপি রয়েছে বলেও ইডি সূত্রের দাবি। অয়নের বাড়ি থেকে বিভিন্ন পুরসভার কর্তা, শিক্ষাকর্তাদের চিঠির প্রতিলিপি পাওয়া গিয়েছে। সেগুলিতে নিয়োগের বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ আছে। সেগুলির যাচাই চলছে। ইডি সূত্রের দাবি, ২০১৬ সালের পর থেকে নিজের এজেন্ট মারফত বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতি চালিয়ে গিয়েছেন অয়ন। পুরসভার জঞ্জাল বিভাগ এবং পুর অফিসের বিভিন্ন পদে চাকরি বিক্রি হয়েছিল। পদের হেরফেরে অয়ন পাঁচ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ। তাঁর ১২ জন এজেন্টের হদিস পেয়েছে ইডি। নিয়োগের সুপারিশ পাঠাতেন অয়ন। সেই চিঠির প্রতিলিপিও মিলেছে।